অধিকার ডেস্ক ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:০১
বাংলাদেশ সরকার বিদেশে জনশক্তির কর্মসংস্থান বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যেই বন্ধ থাকা কয়েকটি দেশের শ্রমবাজার উন্মুক্ত হয়েছে। সংযুক্ত আবর আমিরাত, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া এর মধ্যে অন্যতম। তবে যে হারে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ছে, সে অনুযায়ী রেমিটেন্স বাড়ছে না। সংশ্লিষ্টদের মতে, তিন কারণে মূলত এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রথমত, বাংলাদেশ থেকে যেসব জনশক্তি বিদেশে যাচ্ছে, তার অধিকাংশই অদক্ষ। ফলে তারা কাজের মজুরি কম পাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিতে মন্দা থাকায় শ্রমিকদের বেতন বাড়ছে না। তৃতীয়ত, প্রবাসী আয়ের অন্যতম একটি অংশ মুদ্রা পাচারে ব্যবহার হচ্ছে। প্রবাসীরা বিভিন্নভাবে টাকা পাঠাচ্ছে কিন্তু হুন্ডির কারণে তা দেশের বাইরেই থাকছে।
তবে সরকার বর্তমানে এ সমস্যার সমাধানে কাজ করছে। ১৬৫টি দেশে বাংলাদেশের জনশক্তি রয়েছে। আরও ৫২টি দেশে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে রপ্তানি বাড়ানোর কাজ।
জানা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জন জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে সৌদি আরবে ৫ লাখ ৫১ হাজার ৩০৮ জন গিয়েছেন। মালয়েশিয়ায় ৯৯ হাজার ৭৮৭, ওমানে ৮৯ হাজার ৭৪ জন, কাতারে ৮২ হাজার ১২ জন এবং কুয়েতে ৪৯ হাজার ৬০৪ জন।
এর মধ্যে বিদেশে ২০১৭ সালে ১ লাখ ২১ হাজার ৯৪১ জন নারীকর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। যার মধ্যে সৌদি আরবে ৮৩ হাজার ৩৫৪ জন, জর্ডানে ১৯ হাজার ৮৭২ জন এবং ওমানে ৯ হাজার ১৯৯ জন।
আর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে ১২ লাখ জনশক্তি রপ্তানির পরিকল্পনা করেছিল। তবে এখন পর্যন্ত বছরের সর্বশেষ রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র অনুযায়ী, শ্রমবাজার ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। বিদ্যমান এবং নতুন দেশসহ ৫২টি দেশে একটি অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রমবাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম চলছে।
এ লক্ষ্যে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) যৌথভাবে ‘অ্যাক্টিভিটি প্লান ফর স্কিলস ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মাইগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ২০২১ সাল পর্যন্ত কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নে এ দুই প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করবে।
জানা গেছে, প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে চাকরি নিয়ে ৭ থেকে ৮ লাখ কর্মী যাচ্ছেন। কিন্তু দক্ষতার অভাবে অনেক কম বেতনে তারা চাকরি করছেন। দেশের প্রায় এক কোটি কর্মী বিদেশে চাকরি করলেও রেমিটেন্সের পরিমাণ বাড়ছে না। ২০১৮ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। যা আগের বছর ছিল ১৫ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া বিদেশে দালালদের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক অদক্ষ কর্মী যাচ্ছে। কিন্তু টাকা বাড়ছে না। আর এই কর্মীর বেশিরভাগই গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠী। অন্যদিকে প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য অংশই হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ টাকা পাচার হচ্ছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড