• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভোমরা বন্দরে রাজস্ব ঘাটতি ১০০ কোটি টাকা

  সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

০২ জুন ২০১৮, ১৯:২৫

বহুমূখী প্রশাসনিক জটিলতার জালে জড়িয়ে পড়েছে ভোমরা স্থল বন্দর। নানামুখী চাপ, অহেতুক নজরদারী ও সময়ক্ষেপন ব্যবসায়ীদেরকে অতিষ্ট করে তুলেছে। পণ্য আমদানিতে নেই তিল পরিমাণ ছাড়। বিশেষ করে পঁচনশীল পণ্যের উপর কোন প্রকার ছাড় না দেওয়ায় আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হয়ে বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

দেশের বিত্তবান আমদানিকারকরা ন্যুনতম সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় তারা আমদানি বানিজ্য করতে অনিহা প্রকাশ করছে। এদিকে ব্যবসায়ীদের আমদানি বাণিজ্য প্রসারের স্বার্থে এবং রাজস্ব অর্জনের লক্ষ্যে কাস্টমস প্রশাসন নিয়ম মাফিক কিঞ্চিত পরিমাণ ছাড় দিলেও অন্য প্রশাসন ছাড় দিতে নারাজ। ফলে অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ভোমরা বন্দর দিয়ে আমদানি বানিজ্য করতে অনীহা।

সরকার ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ভোমরা বন্দর থেকে ৮৮১ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও চলতি অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত ৭৬১ কোটি ১৯ লক্ষ ৩৭ হাজার ৪৩২ টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে। এখনও ১২১ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জনে ঘাটতি রয়েছে।

এ ব্যাপারে ভোমরা শুল্ক স্টেশনে রাজস্ব কর্মকর্তা লস্কর বকতিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের আর মাত্র এক মাস (জুন) বাকি। তবে যেভাবে রাজস্ব আহরণের কার্যক্রম চলছে তাতে করে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, আইনি জটিলতা সহ নানাবিধ সমস্যার কারণে এ বন্দরে আমদানি-রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে ভারত থেকে দু’শ থেকে আড়াই’শ পণ্যবাহী ট্রাক প্রতিদিন ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করছে। যার অধিকাংশ আমদানি পণ্য ডিউটি মুক্ত।

ফলে অধিক রাজস্ব আহরিত পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় সরকারে বেঁধে দেওয়া রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে ভোমরা বন্দরে অবকাঠামো উন্নয়ন হলেও এ বন্দরের বিপরিতে ঘোজাডাঙ্গা স্থল বন্দরে অবকাঠামো উন্নয়নে ছোঁয়া লাগেনি। সেখানে সরকারি ভাবে গড়ে ওঠেনি কোন গাড়ি পার্কিং টার্মিনাল এবং আমদানি-রপ্তানি পণ্য রক্ষণশীল ওয়্যারহাউজ।

ঘোজাডাঙ্গা স্থল বন্দরে সিএন্ডএফ এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের দু’জন প্রভাবশালী কর্মকর্তার দু’টি মালিকানাধীন পার্কিং ইয়ার্ড ছাড়া অন্যকোন অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি। এদুটি পার্কিং ইয়ার্ডে ভারতীয় আমদানি পণ্যবাহী ট্রাক গুলো ঢুকিয়ে ইচ্ছাধীন ভাবে বাংলাদেশের ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করানো হচ্ছে।

অধিক মুনাফা লাভের আশায় পার্কিং ইয়ার্ডের মালিকরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। ব্যক্তি মালিকাধীন পার্কিং ইয়ার্ডের মালিকদের যোগসাজসে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো তাদের পার্কিং ইয়ার্ডে ঢুকিয়ে ডিটেন ফ্রি আদায় করছে। ফলে প্রতিদিন যেখানে ৪০০ থেকে ৫০০ পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করার কথা সেখানে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ ট্রাক প্রবেশ করছে। একারণে আমদানি বানিজ্য মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

একদিকে আমদানি কমে যাচ্ছে অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ভোমরা বন্দরের একাধিক সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমদানি বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়বে এবং রাজস্ব আহরণ ব্যাপক ভাবে হ্রাস পাবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড