• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রেনু-পোনা উৎপাদনে কোটিপতি

  কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

১৮ নভেম্বর ২০১৮, ২২:১৪
পুকুর
পুকুরে মাছ ধরছে জেলেরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

দেশীয় প্রজাতির যেসব মাছ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে (ফিঙ্গাললীন,রেণু-পোনা টেবিল ফিশ) তা সংরক্ষণ ও উৎপাদন করে কোটিপতি হয়েছেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিইয়নের চেতনা এলাকার মৎস্য চাষি ইসহাক আলী।

১৯৮৪ সালে ইসহাক ৩ হাজার ৫শ টাকা দিয়ে মাত্র ২টি পুকুরে প্রথম মিনি নার্সারি করে মাছের রেণু-পোনা উৎপাদন শুরু করেন। তখন তার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। ফলে কিছুটা লোকসানের মুখে পড়েন। পরবর্তী সময়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে রেণু-পোনা উৎপাদন শুরু করলে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ১৯৯৮-২০০০ সালে চেতনা নার্সারি থেকে হ্যাচারিতে পরিণত হয়।

২০০৭-২০০৮ সালে নানা কারণে যখন মৎস্য চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন, তখন ইসহাক রেণু-পোনা উৎপাদনের পাশাপাশি গুরুত্ব দেন দেশীয় প্রজাতির মাছের রেণু-পোনা উৎপাদনের ওপর। যার ফলে ওই সময় অন্যান্য মৎস্য চাষির মতো তিনি কোনো ক্ষতির মুখে পড়েননি। দেশীয় প্রজাতি মাছ চাষ ও রেণু-পোনা উৎপাদন অনেক বেশি লাভজনক হওয়ায় তিনি শিং, মাগুর, পাবদা ও গুলসা মাছের চাষ এবং রেণু-পোনা উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

স্থানীয় মৎস্য চাষিরা জানান, রাজারহাট উপজেলায় প্রথমে ইসহাক দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ ও রেণু-পোনা উৎপাদনের কাজ শুরু করেন। তার পরামর্শে এখন নিজ এলাকার মাছ চাষি ছাড়াও বিভিন্ন জেলার চাষিরা দেশীয় প্রজাতি মাছ চাষ শুরু করেছেন। অন্যান্য মাছের চেয়ে দেশীয় প্রজাতি শিং, মাগুর, পাবদা ও গুলসা মাছের দাম বাজারে অনেক বেশি। এই মাছগুলোর মধ্যে বর্তমানে পাবদা ও গুলসা প্রায় ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর শিং ও মাগুর ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। এই দেশীয় প্রজাতির মাছের রেণুর কেজি বর্তমানে ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে প্রায় ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

প্রতি বছর মৎস্য সপ্তাহ দিবসে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ রেণু-পোনা উৎপানকারী হিসেবে ২০০২-২০১৭ সাল পযর্ন্ত সম্মান সম্মাননা পদক পান ইসহাক।

ইসহাক জানান, দিন দিন দেশীয় প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্ম ভুলে যাচ্ছে সে সব মাছের নাম। আর এ কারণেই আমি দেশীয় প্রজাতি মাছের রেণু উৎপাদন করছি। যাতে করে মানুষ সহসাই দেশীয় মাছ খেতে পারেন। বর্তমানে আড়াই একর জমিতে হ্যাচারি নির্মাণ ও ৬টি পুকুরে দেশি মাছের চাষ করছি। যাতে দেশি মাছ চাষ করে চাষিরাও সহজেই তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবে।

রাজারহাট উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল রহমান জানান, দেশীয় প্রজাতি মাছের রেণু উৎপাদন ও মৎস্যচাষে ইসহাক আলীর অবদান ব্যাপক। শুধু রাজারহাট উপজেলাতেই নয়, তার অবদান আশপাশের জেলায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি এখন মডেল। তার এই কৃতিত্বের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ মৎস্য চাষি পদক পেয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড