• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ব্রেক্সিট ঝড়ে টালমাটাল পাউন্ড এবং ব্রিটিশ শেয়ারবাজার

  জুবায়ের আহাম্মেদ

১৮ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:২৩
ব্রেক্সিট
ব্রেক্সিট ঝড়ে কমেছে পাউন্ডের দাম

ইংল্যান্ড প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ক্যাবিনেট মন্ত্রী ডমিনিক রাব এবং ইস্টার ম্যাকভির পদত্যাগের পরই টালমাটাল সময় পার করছে ব্রিটিশ অর্থনীতি। দুই ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদত্যাগের সাথে সাথে দর কমেছে পাউন্ড এবং ব্রিটিশ শেয়ারবাজার এবং ব্যাংকিং খাতে।

“রয়েল ব্যাংক অফ স্কটল্যান্ড” এরই মাঝে ৯ শতাংশ শেয়ার হারিয়েছে। ব্রিটেনের শীর্ষ আবাসন প্রতিষ্ঠান “টেইলর উইম্পি” এবং “ব্যারেট ডেভলাপমেন্ট” হারিয়েছে নিজেদের শেয়ারের ৭ শতাংশ। দর পতন ছিল ব্রিটিশ মুদ্রা পাউন্ডের বাজারেও। ডলারের বিপরীতে গত এক সপ্তাহে পাউন্ডের দর কমেছে ১.৭% ইউরোর বিপরীতে যা ছিল ১.৯ শতাংশ।

এছাড়া ফিনান্সিয়াল টাইমস স্টক এক্সচেঞ্জ (FTSE) এর সবশেষ তথ্য অনুযায়ী ব্রিটেন ভিত্তিক বিভিন্ন ফার্মের শেয়ারে গত এক সপ্তাহে প্রায় ১.৬ শতাংশ দরপতন হয়েছে।

কেন এই অস্থির অবস্থা?

সাধারণ ব্রিটেন অর্থনীতি বা ব্রিটেন শেয়ার বাজারের সবচে বড় অংশটি দখলে রেখেছে ব্যাংক, সাধারণ ব্যবসায়ী শ্রেণী এবং আবাসন খাত। গ্রেট ব্রিটেনের শেয়ার বাজারের মূল দর্পণই বলা চলে মূলত এই তিনটি খাতকে। ব্রেক্সিটের আগে থেকেই তিন ক্ষেত্রে চাপ ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু ব্রেক্সিটের মত একটি ঘোষণা আসার কয়েকদিন পর থেকেই ব্রিটিশ শেয়ারে চরম দুর্দশা হিসেবে দেখা দিয়েছে এই সমস্ত খাতে বিনিয়োগকারীদের।

ব্রেক্সিট

বিবিসি’র বিজনেস এডিটর সাইমন জ্যাক বলেন, “সাধারণ নির্বাচনের অনাকাঙ্খিত প্রভাব সবেমাত্র কাটতে শুরু করেছে। এবং সেই সাথে জেরেমি করবিন সরকারের ক্ষমতায় থাকার সম্ভাবনাও বেশ বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু লেবার পার্টির বিভিন্ন কোম্পানির উপর কর বাড়ানোর সম্ভাবনা এবং অর্থনীতির বড় সব খাতকে জাতীয়করণের মানসিকতার জন্যে শেয়ার মার্কেট বিষয়টি ভালভাবে নিতে পারছে না।”

পাউন্ডের বাজারে ব্রেক্সিট প্রভাব

ব্রেক্সিটের পরপরই পাউন্ডের দরে ব্যাপক এক উত্থান পতন দেখেছে সমগ্র বিশ্ব। পাউন্ডের সাথে মার্কিন ডলারের সম্পর্কে ব্যাপক এক প্রভাব সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে। যার ফলে বিনিয়োগকারীদের সামনে বড় একটি ক্ষতির সম্ভাবনা এরই মাঝে দেখা দিয়েছে।

পাউন্ডের সাম্প্রতিক সময়ের উত্থান পতনের পুরোটা জুড়েই ব্রেক্সিটের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। ২০১৬ সালের ২৩ জুনের গণভোটের পর গত বুধবারই পাউন্ডের এমন দরপতন দেখা গিয়েছে। পাউন্ডের এমন অচলাবস্থা সবশেষ দেখা যায় ২০১৬ সালের জুনের গণভোটের ঠিক পরপরই।

গত বুধবার ক্যাবিনেট মন্ত্রীসভার শ্রম এবং অবসর কল্যাণ সেক্রেটারি ইস্টার ম্যাকভি সংসদ থেকে পদত্যাগের পরই নতুন এই অচলাবস্থার সামনে পড়ে ব্রিটিশ অর্থনীতি। উল্লেখ্য এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র প্রতি অনাস্থা ভোট চাওা এমপি সংখ্যা ২৩। সংখ্যাটি ৪৮ হলে নতুন চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে। দীর্ঘ দুই বছর আলোচনার ব্যাপক দড়ি টানাটানির পর উভয় পক্ষ একটি সমঝোতায় আসলেও সেটি ব্রিটেনের স্বার্থ বিরোধি অভিযোগে ম্যাকভি সহ মোট ৭ মন্ত্রী গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেন।

ব্রিটেনের আইএনজি গ্রুপের ক্রিস টার্নার বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ডমিনিক রাবের পদত্যাগের ফলে গ্রেট ব্রিটেনে থেরেসা মের শাসন এবং নেতৃত্ব পরিবর্তনের দিকে নতুন একটি মোড় আসছে। এবং খুব সম্ভব সেটি “নো ব্রেক্সিট ডিল”।

তিনি বলেন, যদি নেতৃত্ব নিয়ে এমন অচলাবস্থা শীঘ্রই অবসান না হয় অথবা যদি ব্রেক্সিট থেকে সরে আসার ব্যাপারে কোন স্পষ্ট ধারণা সরকার আমাদের দিতে না পারে, সেক্ষেত্রে পাউন্ডের দর অতি শীঘ্রই আর তিন থেজে চার শতাংশ কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৪ জুন গণভোটের মাধ্যমে ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্ত আসে। ব্রেক্সিটের পক্ষে ব্রিটিশদের গণ রায়ের পর বিশ্ব শেয়ার ও মুদ্রাবাজারে ব্যাপক এক অস্থিরতা তৈরি হয়। সেই বছরের অক্টোবরে বিশ্ববাজারে পাউন্ডের দর বিগত ৩১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। সবশেষ এই বছরের খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর আবার টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মুদ্রাবাজার ও শেয়ারবাজারে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড