• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে : ড. ইফতেখারুজ্জামান

  অধিকার ডেস্ক

২৬ জুন ২০২০, ২৩:০৪
ড. ইফতেখারুজ্জামান
ড. ইফতেখারুজ্জামান (ফাইল ছবি)

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টে দেশ থেকে গত কয়েক বছরে অস্বাভাবিক হারে টাকা পাচারের তথ্য উঠে এসেছে। সুইস ব্যাংকের প্রতিবেদন তারই প্রমাণ দিচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশিদের প্রায় ৫ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা পাওয়া গেছে। আর এর মধ্যে অবৈধভাবে পাচার হওয়া টাকা ফিরে আনতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের (সুইস ব্যাংক) অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালে বাংলাদেশিদের জমানো টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৩০ লাখ ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। ২০১৮ সাল শেষে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৬২ কোটি সুইস ফ্রাঁ, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৫ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা (বাংলাদেশি মুদ্রায় এক সুইস ফ্রাঁর বিনিময়মূল্য ৮৯ টাকা ধরে এ হিসাব করা হয়েছে)।

বৃহস্পতিবার 'ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড–২০১৯' বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমার এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ থেকে নানাভাবে অবৈধ উপায়ে পাচার হওয়া অর্থ যেমন সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা হয়, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকেরাও দেশটিতে অর্থ জমা রাখেন। তাই সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশিদের মোট অর্থের মধ্যে বৈধ–অবৈধ সব অর্থই রয়েছে।

সাধারণত সুইস ব্যাংক অর্থের উৎস গোপন রাখে। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ জমা রাখে। তাদের প্রতিবেদনের তথ্য মতে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের পরিমাণ ৬০ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাংক। যা স্থানীয় মুদ্রায় ৫ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। ২০১৮ তে বাংলদেশিদের মোট আমানতের স্থিতি ছিল ৬১ কোটি ৭৭ লাখ ফ্রাংক।

টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট আইনি কাঠামো আছে। ওই দেশেও আছে আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামো্। বিশেষ করে আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনে বিস্তারিত আইনি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে ।’

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সুইস ব্যাংকে টাকা অবৈধভাবে নেওয়া হচ্ছে বিধায়ই তারা প্রকাশ করছে। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে টাকা পাচার ও তার শাস্তির ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে বলা আছে। কীভাবে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে, সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং অপরাধীর শাস্তির কথা বলা আছে। বর্তমান আইনে পাচারকৃত অর্থের দ্বিগুণ জরিমানার বিধান রয়েছে। একইভাবে এর সঙ্গে জড়িতদের ৪ থেকে ১২ বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে। কিন্তু আইনের বাস্তবায়ন নেই। ফলে টাকা পাচার বাড়ছে।’

সরকার চাইলে সহজেই টাকা ফিরিয়ে আনাতে পারে মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে যে দেশে টাকা পাচার হয়, ওই দেশের কর্তৃপক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য। একে বলা হয়, পারস্পরিক আইনি সহায়তা কার্যক্রম। এর মাধ্যমে সরকার চাইলে সুইস কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য দেবে। আর এই প্রক্রিয়ায় টাকা ফিরিয়ে এনে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারলে পাচার বন্ধ না হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

দেশে থেকে আরও টাকা পাচার হয় মন্তব্য করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘যে তথ্য নিয়ে আলোচনা করছি এটা প্রকাশ করা হয়েছে তাই আমরা জানছি। কিন্তু এর বাইরেও আরও অর্থপাচার হয়। যে তথ্য প্রকাশ করা হয় না। বিভিন্ন গবেষণায় যে তথ্য উঠে আসে , কিছু তথ্য পাওয়া আসে। কাজেই সামগ্রিকভাবে এ অর্থের পরিমাণ অনেক ব্যাপক। টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। যারা টাকা পাচার করে তারা খুবই প্রভাবশালী। তাই এখানে হাত দেওয়া হয়না। ’

সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সুইস ব্যাংকগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশের মধ্যে ভারতীয়দের আমানতের পরিমাণ ৮৯.৯ কোটি ফ্রাংক, পাকিস্তানীদের ৪১ কোটি ফ্রাংক।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড