• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঋণের কিস্তি ও সুদহার স্থগিতের দাবি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

০৬ এপ্রিল ২০২০, ১০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করছেন (ছবি : সংগৃহীত)

করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ অবশ্যই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। কিন্তু এ মুহূর্তে সবার আগে প্রয়োজন শিল্প উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীদের চলতি ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো।

একই সঙ্গে ঋণের বিপরীতে সুদ আরোপ স্থগিত করে মূল ঋণসহ আরোপিত সুদ একটি ব্লক অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে এক বছরের জন্য নিয়ে যাওয়া। তাহলে এর ওপর আর সুদ আরোপিত হবে না। ফলে ঋণের অঙ্ক বাড়বে না। এর ফলে একদিকে উদ্যোক্তাদের চলতি ঋণ যেমন খেলাপি হবে না, তেমনি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্যাকেজের আওতায় নতুন ঋণ সুবিধা পেতে সমস্যাও হবে না। কিন্তু এ ঘোষণা না এলে বেশির ভাগ শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালু করাই সম্ভব হবে না। বেশ কয়েকজন শিল্প উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা এবং কয়েকজন বিশেষজ্ঞ সংবাদ মাধ্যমে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ ও আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ নিঃসন্দেহে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী সাহসী উদ্যোগ। এজন্য সরকারপ্রধানকে আমরা অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই এবং তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু এখানে কয়েকটি বৈশ্বিক প্রভাবের সরল অঙ্ক আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে হবে।

প্রথমত, করোনা প্রভাবের কারণে বিশ্বজুড়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবে হ্রাস পাবে। একেবারে অপরিহার্য জিনিস ছাড়া মানুষ এখন তার ফ্যাশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাহিদার লাগাম টেনে ধরবে। বাজেট কাটছাঁট করবে। এর ফলে বেশিরভাগ শিল্পপ্রতিষ্ঠান আগের মতো সহসা পণ্য উৎপাদনে অর্ডার বা কার্যাদেশ পাবে না। এছাড়া সেভাবে চাহিদা না পেলে অনেকে ফ্যাক্টরি চালু করার ঝুঁকি নেবে না। কেউ কেউ চালু করলেও সীমিত আকারে করবেন। এই নেতিবাচক প্রভাব শুধু রফতানিমুখী শিল্পের ক্ষেত্রে নয়, সব ক্ষেত্রেই পড়বে। প্রতিটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মাথার ওপর এখন এই ‘করোনা খক্ষ’ ঝুলছে।

দ্বিতীয়ত, আল্লাহর রহমতে যদি এ সংকট দ্রুত কেটেও যায়, তাহলে শিল্প উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হল- ব্যাংকের চলতি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা। কিন্তু ফ্যাক্টরি যেহেতু বন্ধ, সেহেতু ফ্যাক্টরি থেকে মালিকদের নিয়মিত আয়ের পথও বন্ধ। বিপরীতে ব্যয়ের হিসাব থেমে নেই। ব্যয়ের চাপ প্রবল। সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ শিল্পমালিক শেষ পর্যন্ত ব্যাংকের দায়দেনা পরিশোধ করতে পারবেন না। ফলে বিরূপ পরিস্থিতির কারণে অনেকে ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন।

তৃতীয়ত, এ অবস্থায় কোনো ঋণখেলাপি ব্যক্তি যদি ব্যাংকের কাছে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বা চলতি মূলধন হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ প্যাকেজের ঋণ চান, তাহলে তার এই ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। কেননা ঋণ দেয়া হবে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে। সঙ্গত কারণে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ প্যাকেজের ঋণ পেতে হলে শর্ত হিসেবে ব্যাংক আগে বলবে, খেলাপি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে। সেটি যেহেতু তার পক্ষে সম্ভব হবে না, সেহেতু সরকারের আপৎকালীন এই ঋণ সুবিধা থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন।

আরও পড়ুন : বিমানের খরচে 'করোনার ছোবল'

এ প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে কোনো শিল্প উদ্যোক্তা ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে আগামী জুন পর্যন্ত খেলাপি না করার নির্দেশ সব ব্যাংককে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটি স্বল্প সময়ের জন্য হলেও তা করা হয়েছে। এরপর আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড