• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রুপির বিপরীতে শক্তিশালী টাকা 

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

২৬ মার্চ ২০২০, ১৯:৪২
টাকা
(ছবি : সংগৃহীত)

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনা ভাইরাসে (কভিড-১৯) হুমকির মুখে বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যে। এর প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারতেও। বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে ভারতীয় রুপির এ সপ্তাহে রেকর্ড মূল্যপতন হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) একটা পর্যায়ে ১০০ রুপির দাম গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ১১০ টাকায়। দুনিয়াময় বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে যে উথালপাথাল চলছে তাতে বাংলাদেশি টাকা ডলারের বিপরীতে বেশি ‘রেজিলিয়েন্স’ বা দৃঢ়তা দেখাতে পেরেছে বলেই রুপির তুলনায় তার দর বেড়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ করোনা ভাইরাসের কারণে অবরুদ্ধ। বৈশ্বিক ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করার কারণে সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সংক্রমণের হার নয় বরং ‘বিচ্ছিন্ন’ ও ‘অবরুদ্ধ’ করার নীতিই বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে ডলার ও টাকার বিপরীতে রুপির মান পতন হয়েছে।

ইন্টারনেট মানি এক্সচেঞ্জ সূত্র অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) এক মার্কিন ডলারে বিনিময়ে ভারতীয় মুদ্রার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৫ দশমিক ৮৫ রুপি। ফলে এক ডলারে পাওয়া যাবে ৭৫.৮৫ রুপি। চলতি সপ্তাহে মঙ্গলবার(২৪ মার্চ) এটি এক পর্যায়ে প্রতি ডলার ৭৭ দশমিক ৩৩ রুপিতে নেমেছিল, যা ইতিহাসে রুপির সর্বনিম্ন দর।

এদিকে ডলারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রুপির বিপরীতে শক্তিশালী হচ্ছে টাকা। বুধবার (২৫ মার্চ) এক পর্যায়ে ১১০ রুপি পাওয়া গেছে ১০০টাকায়।

২৬ মার্চের তথ্য মতে, প্রতি রুপিতে মান দাঁড়ায় ১ টাকা ১১ পয়সা। এ যাবৎকালে টাকার বিপরীতে রুপির এ দর সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৮ সালে অক্টোবরে রুপিতে মান দাঁড়ায় ১ টাকা ১৩ পয়সা।

আরও পড়ুন : বাতিল হচ্ছে অর্ডার, বন্ধের পথে কারখানা

এ দিকে প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান দাড়িয়েছে ৮৪ টাকা ০৮ পয়সা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করছে। তবে সাধারণ মানুষ, যারা ভ্রমণ করতে বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের প্রায় ৮৮ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে ডলার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতে রপ্তানি রেমিট্যান্স কমেছে, অন্যদিকে চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে রুপির মান অবমূল্যায়ন হয়েছে। তবে রুপির বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হলে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে তেমন বড় প্রভাব পড়বে না।

ভারতে ডলারের দাম বাড়ায় বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা কিছুটা সমস্যায় পড়বেন। তাই বাংলাদেশেরও টাকার মান নির্ণয়ে চিন্তা করা উচিত।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে এখন ভালো সময় যাচ্ছে না। ভারতও এর বাইরে নয়। তাদের রপ্তানি, রেমিট্যান্স কমেছে। অন্যদিকে চাহিদা অনেক বেড়েছে। এতে তাদের আয় কমে গেছে। ফলে তাদের কারেন্সি ডিভ্যালুয়েশন (মুদ্রার অবমূল্যায়ন) করেছে। তাই রুপির দাম কমে গেছে।

তিনি আরও বলেন, রুপির বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হলে আমাদের খুব বেশি লাভ নেই। পণ্য আমদানি- রপ্তানিতে তেমন বড় প্রভাব পড়বে না। তবে ভারতে মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ায় দেশ থেকে যারা ভারতে পণ্য রপ্তানি করেন তারা কিছুটা সমস্যায় পড়বেন। কারণ রপ্তানি পণ্যের দাম বেড়ে যাবে, ফলে তাদের চাহিদা কমবে।

বিশ্বের এই পরিস্থিতি বিবেচনায় টাকার মান অবমূল্যায়ন পরামর্শ দিয়ে সাবেক এ গভর্নর বলেন, সময় এসেছে টাকার মান অবমূল্যায়ন করার। কারণ শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, ভারতের মুদ্রার মান কমেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকার মান কৃত্রিমভাবে ধরে রাখছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এখন চিন্তা করা উচিত কিছুটা হলেও এটি কমানো। তা না হলে রপ্তানি চ্যালেঞ্জে পড়বে।

এদিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনার প্রভাবে দেশের পোশাক কারখানায় একের পর এক ক্রয় আদেশ স্থগিত করছে ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। ফলে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন মালিকরা।

এ বিষয়ে বিজিএমইএর পরিচালক আসিফ ইব্রাহিম জানান, ৯৫৪টি পোশাক কারখানার আট কোটি ২২ লাখ ৯১ হাজারটি ক্রয় আদেশ স্থগিত করেছে। যার আর্থিক পরিমাণ দুই দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এসব কারখানায় ১৯ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করেন। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাণিজ্য অনিশ্চয়তা, অস্থিরতা ও বহুবিধ পতনের মধ্য দিয়ে চলছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকের পরও এ অবস্থা চলতে থাকলে গভীরতর মন্দায় প্রবেশ করবে বৈশ্বিক অর্থনীতি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড