• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আগামী মাস থেকে আমানতের সুদ ৬ শতাংশ

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

২৯ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৩৮
ব্যাংক
ব্যাংক লোগো (ছবি : সংগৃহীত)

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নে কোনো ব্যাংক আগামী মাসের ১ তারিখ থেকে ৬ শতাংশের বেশি সুদে আমানত গ্রহণ করবে না। এটি মেয়াদি স্কিম ছাড়া সব ধরনের আমানতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তবে যে সকল আমানতের মেয়াদ শেষের দিকে, তাদের মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) বৈঠকে এ বিষয়ে সবাই একমত হন। বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা ও প্রধান নির্বাহীরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে এবিবির চেয়ারম্যান ও ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি আলী রেজা ইফতেখার জানান, ব্যাংকভেদে আমানতে সুদেহার ভিন্ন হলে বাজারে অসমতা সৃষ্টি হবে। ধাপে ধাপে সুদের হার কমানো হবে। ইতোমধ্যে সরকারের আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী আমানতের সুদহার ধীরে ধীরে কমানো হচ্ছে।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্যই সবার মধ্যে আলোচনা হয়েছে এবং আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হচ্ছে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ৯ শতাংশ সুদহার বড় ঋণের ক্ষেত্রে কার্যকর সম্ভব হলেও ক্ষুদ্রঋণের ক্ষেত্রে কঠিন হবে। বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ কোটি টাকার আমানত রয়েছে ব্যাংকে যার বড় অংশই মেয়াদি। ৬ শতাংশ সুদে মেয়াদি আমানতের সঙ্গে তহবিল ব্যবস্থাপনা খরচ রয়েছে। আর ক্ষুদ্রঋণের ক্ষেত্রে তহবিল ব্যবস্থাপনা খরচ বেশি হবে। এ কারণে ক্ষুদ্রঋণে ৯ শতাংশ সুদহার কার্যকর সম্ভব নাও হতে পারে।

ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা জানান, ১ এপ্রিল থেকে ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনার জন্য এবিবির বৈঠকে আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার বিষয়ে এমডিরা একমত হয়েছেন। আর এ সিদ্ধান্ত ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে। ৩ মাস থেকে ৩ বছর পর্যন্ত মেয়াদি আমানতের (এফডি) সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। তবে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না সর্বনিম্ন সুদের বিষয়ে।

ব্যাংক নিজেদের সামর্থ্য ও সক্ষমতা অনুযায়ী সর্বনিম্ন সুদে আমানত সংগ্রহ করতে পারবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত স্প্রেড (ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান) মানতে হবে। সকল ব্যাংক একসঙ্গে সুদের হার কমালেই কেবলমাত্র আমানতের সুদের হার কমানো সম্ভব হবে।

সম্প্রতি সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণের সুদহার নামাতে ব্যাংকারদের দাবি অনুযায়ী সরকারের আমানতের সুদহার নির্দিষ্ট করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে সরকারের নিজস্ব অর্থের ৫০ শতাংশ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে রাখার বিধান রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমানতকারীদের সবাই যাতে সরকারি ব্যাংকের দিকে ঝুঁকে না পড়েন সেজন্য বেসরকারি ব্যাংকে ডিপোজিটে মুনাফা আধা শতাংশ বেশি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন : ছাড়-উপহারের ছড়াছড়ি চলছে বাণিজ্য মেলায়

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অর্থ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে আমানত হিসেবে রাখলে সর্বোচ্চ সুদ পাবে ৬ শতাংশ। আর এই অর্থ যদি সরকারি ব্যাংকে আমানত হিসেবে রাখা হয় তবে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ শতাংশ সুদ পাবে। অর্থাৎ বেসরকারি ব্যাংকে আধা শতাংশ বেশি সুদ পাবে।

এ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পে ১০ শতাংশের বেশি সুদে ঋণ বিতরণ করছে বেশিরভাগ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। অনেক ব্যাংক তো আবার ১৬-১৭ শতাংশ সুদেও ঋণ দিচ্ছে। আবার কোনো কোনো ব্যাংক ক্ষুদ্র শিল্পে সর্বোচ্চ ১৮ ভাগ হারে ঋণ বিতরণ করছে।

গবেষণা সংস্থা বিআইডিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যাংকগুলো গড়ে ৯-১১ শতাংশ সুদে আমানত নিচ্ছে। আর ঋণ বিতরণ করছে ১৩-১৫ শতাংশ হারে।

এ পরিস্থিতিতে নয় শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের জন্য ছয় শতাংশ সুদে আমানত নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ওডি/এওয়াইআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড