মশলার ঝাঁজে দিশেহারা ক্রেতা, দেড় মাসে দাম দ্বিগুণ

নিত্য ভোগ্যপণ্যের দাম গত দেড় মাসে নানা অজুহাতে একের পর এক বেড়েই চলেছে। বিগত ৪ মাস পেঁয়াজের বাজারে যে অস্থিরতা ছিল তা এখন অনেকটাই কমে গেছে। তবে সে জায়গা দখল করে নিয়েছে চালের বাজার। দুই দফা দাম বেড়েছে এই ১ মাসে। এই দিকে মশলার বাজারও এই তালে তাল মিলিয়েছে।

গত দেড় মাসে রান্নায় অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য এই মশলার দাম বেড়েছে দফায় দফায়। খুচরা বাজারে কোনো কোনো মশলার দাম হয়েছে দ্বিগুণ।

মশলার দাম বিশ্ববাজারে বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারগুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তাদের কথার সঙ্গে ক্রেতারা একমত নন।

ক্রেতারা বলছেন, অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা দেশের বাজারে মশলার কোনো ঘাটতি না থাকলেও নানা অজুহাতে মশলার দাম বাড়াচ্ছে। সরকারিভাবে বাজার মনিটরিং না করলে মশলার বাজারও লাগামহীন হয়ে যাবে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর রামপুরা, খিলগাঁও, মালিবাগ রেলগেট ও কারওইয়ান বাজার ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এসব বাজারে ৪ হাজার ৬০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাক দরে প্রতিকেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে। অথচ ১ থেকে দেড় মাস আগে ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকা দরে এলাচ বিক্রি হতো। এ দিকে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরের জয়ত্রী ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গত দেড় মাসে জায়ফলের দাম দ্বিগুণ বেড়ে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ৪০০ থেকে ৪৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো।

খোলা গুঁড়া মরিচ দাম কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়ে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে শুকনা মরিচ কেজিপ্রতি ১৩০ টাকা বেড়ে ৩০০ টাকা, দারুচিনি কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, ধনিয়া গুঁড়া কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকা, কালো এলাচ কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ৯৫০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা এবং হলুদ গুঁড়া কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ দিকে অন্যান্য মশলাজাতীয় পণ্যের মধ্যে আদা, রসুন, পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের দাম রয়েছে স্বাভাবিক। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা, দেশি রসুন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, ইন্ডিয়ান রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, আদা ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা, পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৮০, চায়না পেঁয়াজ ৬০ টাকা ও বার্মা পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন : পুঁজিবাজারে ফের ইতিবাচক গতি

মশলার দাম নিয়ে কারওয়ান বাজারে ওবায়দুল্লাহ নামে এক ক্রেতা বলেন, ১ মাস ধরে বাজারে কয়েক দফা দাম বৃদ্ধিতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অথচ বাজারে কোনো মশলার ঘাটতি নেই। কিন্তু বেশি লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছেন। বর্তমানে বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। যদি এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তবে মশলার বাজারের অস্থিরতা কাটবে না।

মশলা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ জানান, মসলার দাম বিশ্ববাজারে অনেক বেশি হওয়ায় দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। তাছাড়া মসলার রপ্তানিকারক দেশ ভারতে বৃষ্টি ও বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারা নিজেরাই এখন মশলা আমদানি করছে। রমজানের আগেই ভারতে মশলা উৎপন্ন হবে এবং সে মশলা বাজারে এলেই মশলার দাম কমে যাবে।

ওডি/এওয়াইআর