নিজস্ব প্রতিবেদক
বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, বর্তমানে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমেছেন। পাশাপাশি শেয়ারবাজারও একেবারে শুয়ে পড়েছে। ফলে এর অচলাবস্থা দূর করতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে জাতীয় সংসদ ভবনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এই দাবি করেন তিনি।
বিরোধীদলীয় এই নেতা বলেন, বর্তমানে দেশ চলে তিন নীতিতে- রাজনীতি, অর্থনীতি ও দুর্নীতি। শেয়ার মার্কেট ইতোমধ্যেই মাটিতে শুয়ে গেছে। ফলে বিনিয়োগকারীরাও রাস্তায় নেমে গেছেন।
অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, শেয়ারবাজার কেন এমন হলো? অর্থমন্ত্রী অত্যন্ত সুদক্ষ। শেয়ারবাজার নিয়ে তিনি চিন্তাও করেন, তার একটা গভীর চিন্তা-ভাবনাও আছে। পাশাপাশি এই মার্কেটের কোথায় কী হচ্ছে- এর সম্মুখ ধারণা রয়েছে তার। আর শেয়ারবাজার এমন হওয়ার কারণগুলো আমাদের সবার জানা। সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দুর্বল-পচা কোম্পানিগুলো লিস্ট করে বাজারে ছেড়ে দেয়। এতে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে পড়েন। আমরা বলেছিলাম, দুর্বল কোম্পানিগুলোকে যেন লিস্টিং না করে। এ সময় দুর্বল কোম্পানির লিস্টিং দেওয়াকে তিনি শেয়ারবাজার ধসের একমাত্র কারণ হিসেবে দাবি করেন।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আমরা লিস্টিং দেই না, দেয় সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আমরা বারবার ফেরত পাঠাই অথচ দুর্বল লোকরা পচা কোম্পানিগুলো বাজারে নিয়ে আসছে। ফলে রাস্তায় বসতে হচ্ছে দেশের বিনিয়োগকারীদের। এ নিয়ে আমরা তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি করেছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত কমিশন করা হয়নি, একটা লোককেও শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। ফলশ্রুতিতে বাজার থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকা মূলধন নেই।
সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের ওপর অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা একেবারে রাস্তায় বসে গেছেন। আর যারা ৩০ বছর ধরে শেয়ার মার্কেটে যেত তাদের পায়ে জুতা নেই। এখন তারা বলছেন, ‘আমাদের দেখার কি কেউ নেই।’ এ দিকে, সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন জগদল পাথরের মতো বসে আছে। শুধু লিস্টিং দেওয়াই তাদের কাজ, আর কোনো কাজ নেই? পচা কোম্পানি এনে প্রতিদিন নিঃস্ব করে দেওয়া হচ্ছে, কারও বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এখন পর্যন্ত ইস্যু ম্যানেজারকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। প্রশান্ত হালদার নামে এক লোক নন-ব্যাংকিং কিছু প্রতিষ্ঠান করে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। উনি এখন দেশে নেই, পালিয়ে গেছেন। কার জবাব কে দেবে? এ জন্য তিনি অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী যদি হস্তক্ষেপ করেন তাহলে শেয়ার মার্কেট আবারও সবল অবস্থানে ফিরে আসতে পারে। নইলে এখান থেকে ফিরে আসার আর কোনো উপায় নেই।
বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ তার সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, যখন দেশে কোনো বিপর্যয় দেখতে পান না বা দেশে কোনো সংকট নেই তখন সংসদে মন্ত্রীরা প্রশ্নোত্তর দেন। এ সমস্ত উত্তর যখন আসে হতভম্ব হয়ে যাই, বিস্মিত হয়ে যাই। গত এক সপ্তাহে মানুষ পুঁজি বাজারের জন্য রাস্তায় শুয়ে পড়েছে, তাদের আজ কাজ-কাম নেই। এভাবেই বিপর্যস্ত হয়ে লাখ লাখ পরিবার সম্পূর্ণরূপে ধুলায় মিশে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন : পুঁজিবাজারে মূল্য সূচকের বড় উত্থানের আভাস
তিনি বলেন, এসব ব্যাপার সরকারের হস্তক্ষেপ বা দৃশ্যমান কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই। আমি এই বিষয়ে আশ্বস্ত হতে পারছি না। আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করছি, এত প্রবৃদ্ধি এত উন্নতি করছি যে, আমরা চারদিকে বিশাল বিশাল স্থাপনা বানাচ্ছি। প্রকৃত অর্থে অর্থমন্ত্রী বিনিয়োগকারীদের রক্ষার জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন- তা জানতে চান তিনি।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড