লাইফস্টাইল ডেস্ক
এরই মধ্যে নানা মাধ্যমে এই ভাইরাস নিয়ে ছড়িয়ে আছে নানা খবর ও গুজব। তবু, কতটুকু জানি আমরা করোনা বা কোভিড-১৯ সম্পর্কে?
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসে কাঁপছে সারা পৃথিবী। প্রতিনিয়ত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য রাত-দিন খেটে যাচ্ছেন বাঘা বাঘা চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে নানা মাধ্যমে এই ভাইরাস নিয়ে ছড়িয়ে আছে নানা খবর ও গুজব।
তবু, কতটুকু জানি আমরা করোনা বা কোভিড-১৯ সম্পর্কে? সেই আলাপ হাজির করা হলো বিবিসির সূত্র ধরে।
আক্রান্তের সংখ্যা কত?
করোনা ঘিরে এটি সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর একটি। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৮৫ হাজার। কিন্তু এটি শুধুই আংশিক তথ্য। কেননা, অনেক দেশে অনেকেই রয়ে গেছেন টেস্টের বাইরে।
আবার এমন অনেকেই আছেন, যারা আক্রান্ত হলেও ভাইরাসটির কোনো লক্ষণ তাদের মধ্যে দেখা না যাওয়ায় বা তারা অসুস্থতা অনুভব না করায় করাননি টেস্ট।
নতুন একটি এন্টিবডি টেস্ট উদ্ভাবন করার পরই শুধু গবেষকদের পক্ষে বোঝা সহজ হবে, কে কে এই ভাইরাসে আক্রান্ত। শুধু তখনই জানা যাবে, করোনা ভাইরাস ঠিক কতটুকু বা কত সহজে ছড়াচ্ছে।
কতটুকু প্রাণঘাতী?
আক্রান্তের সংখ্যা সঠিকভাবে জানার আগে যথাযথ মৃত্যুহার চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে ধারণা করা হয়ে, এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার প্রায় ১ শতাংশ। তবে উপসর্গবিহীন আক্রান্তের সংখ্যা যদি বেশি হয়, সেক্ষেত্রে মৃত্যুহার আরও কম হবে।
উপসর্গের পূর্ণ বিকাশ
জ্বর আর শুষ্ক কাশিই করোনা ভাইরাসের প্রধান উপসর্গ। এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা ও ডায়েরিয়ার কথাও জানা গেছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, কোনো কোনো রোগীর একইসঙ্গে সর্দি ও হাঁচির মতো হালকা উপসর্গও পাওয়া গেছে।
গবেষকদের আশঙ্কা, অনেক রোগীই হয়তো জানেনই না তিনি ভাইরাসটি বহন করছেন।
শিশুদের খেলা থেকে...
করোনা ভাইরাসে শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। যদিও তাদের মধ্যে হালকা উপসর্গই বেশি দেখা যায় এবং অন্য বয়সীদের তুলনায় করোনায় শিশু মৃত্যুর হার তুলনামূলক যথেষ্ট কম।
তবে শিশুরা সাধারণত রোগ জীবাণু বেশি ছড়ায়। কেননা, তারা খেলাধুলা করে, নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে মেশে। তবে তারা ঠিক কী মাত্রায় করোনা ছড়ায়, গবেষকরা সেটি নিশ্চিত নন।
উৎসের খোঁজ
গত বছরের শেষ দিকে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়েছে ভাইরাসটি। ধারণা করা হয়, স্থানীয় এক অ্যানিমেল মার্কেট থেকেই ছড়িয়েছে এটি।
আনুষ্ঠানিকভাবে 'সার্স-কোভ-২' নামে ডাকা করোনা ভাইরাসটি বাদুড়ের মাধ্যমে ছড়ানো ভাইরাসের অনেকটাই কাছাকাছি ধরনের। ধারণা করা হয়, ভাইরাসটি বাদুড়ের কাছ থেকে কোনো এক 'রহস্যময়' প্রজাতির পশুর শরীর হয়ে মানুষের শরীরে পৌঁছেছে।
তবে কী সেই 'লিংক' বা সংযোগ, সেটি এখনো উদ্ধার করতে পারেননি গবেষকরা।
গরমে কমবে প্রকোপ?
সর্দিজ্বর ও ফ্লু সাধারণত গ্রীষ্মকালের তুলনায় শীতের দিনগুলোতেই বেশি ঝেঁকে বসে। তবে সেগুলোর মতো করোনার প্রকোপও গরমকালে কমবে কি না, সে ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত নন।
যুক্তরাজ্য সরকারের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টারা সতর্ক করে দিয়েছেন, মৌসুমের কারণে করোনার প্রভাবের হেরফের ঘটবে কি না- তা বলা সম্ভব নয়। যদি ঘটেও, তবে সেটি সর্দিজ্বর ও ফ্লুর তুলনায় খুবই কম ঘটবে বলে আশঙ্কা তাদের।
গ্রীষ্মে যদি কোনো বড় ধরনের ডুব দেয়ও, শীতে ভাইরাসটির আরও বিপজ্জনকভাবে ফিরে আসার আশঙ্কা রয়েছে। কেননা, সে সময়ে শীতকালীন অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত রোগীতে এমনিতেই হাসপাতাল ভরা থাকে।
কেউ কেউ মারাত্মক উপসর্গের শিকার যে কারণে...
করোনায় আক্রান্ত বেশিরভাগের মধ্যেই হালকা উপসর্গের দেখা মেলে। তবে প্রায় ২০ শতাংশের মধ্যে দেখা যায় মারাত্মক উপসর্গ। এর কারণ কী?
এ ক্ষেত্রে আক্রান্তের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেই একটি বড় কারণ বলে মনে করা হয়। এরসঙ্গে কিছু জেনেটিক কারণও রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতক্ষণ লড়তে পারে?
কোনো ভাইরাসের বিরুদ্ধে একজন মানুষের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক কতক্ষণ লড়তে পারে, সেটি নিশ্চিত হওয়া এখনো সম্ভব হয়নি। তবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কাজ করা জরুরি।
করোনা যেহেতু একেবারেই নতুন ভাইরাস, তাই এ নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এখনো জড়ো করা যায়নি।
ভাইরাসের কি বদল ঘটবে?
ভাইরাস সবসময়ই পরিবর্তনশীল। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাতে এগুলোর জেনেটিক কোডে কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন আসে না। দিনে দিনে ভাইরাসের প্রাণঘাতী হওয়ার ক্ষমতা আরও কমে আসবে- সাধারণত এমন প্রত্যাশা করা হলেও এর কোনো নিশ্চয়তা নেই।
তবে সমস্যা হলো, কোনো ভাইরাসের যদি বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে, যে ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সেটিকে শনাক্ত করতে পারে না এবং সেটির জন্য উদ্ভাবিত সবিশেষ ভ্যাকসিনেও কাজ হয় না।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড