অধিকার ডেস্ক
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বেড়েই চলছে। সে সঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে সোশ্যাল ডিসট্যান্স বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলছেন। কিন্তু এই বিষয়টি অনেকেই বুঝতে পারছেন না। কিংবা অনেক প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন।
লেখক ও কলামিস্ট আনিসুল হক সিএনএন হেলথ অবলম্বনে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টিকে সহজভাবে তুলে ধরেছেন। চলুন এই বিষয়টি সম্পর্কে জানা যাক-
মূলত সামাজিক দূরত্ব বলতে বাসায় থাকা, ভিড়ের মধ্যে না যাওয়া, একে অন্যকে স্পর্শ না করাকে বোঝানো হয়।
১. আমি কি বাজার করতে যেতে পারব?
হ্যাঁ, আপনি নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে যেতে পারবেন। তবে যতটা পারা যায় কম যাবেন। কম মানুষ থাকে এমন সময় বাজারে যাবেন। সেখানে যাবেন, যেখানে কম ভিড় থাকে। মোটকথা ভিড় এড়িয়ে চলুন।
বাজার থেকে বের হয়েই হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন। এসেই ভালোভাবে হাত ধুয়ে নেবেন। তরকারি, ফল ধুয়ে নেবেন। বক্স নাড়ার পরই হাত ধোবেন।
খাবার কিনে মজুত করবেন না। খাদ্যশস্য কম পড়ার কোনো কারণ ঘটেনি।
২. আমি কি খাবার অর্ডার দিয়ে বাসায় এনে খেতে পারব?
হ্যাঁ। খাদ্য থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর কথা শোনা যায়নি। তবে যে প্যাকেটে খাবার আনা হবে, সেটা ধরার পর হাত ধুয়ে নিতে হবে। আর কাঁচা সালাদ, ফল বাইরে থেকে নিশ্চয়ই আনাবেন না। আর যিনি খাবার নিয়ে আসবেন, তাকে বলবেন খাবার দরজার বাইরে রেখে দিতে। দাম ও টিপস দেবেন অনলাইনে। (আমাদের দেশে এটা কীভাবে হবে, আমি জানি না।)
৩. আমি কি গণপরিবহন বাস, ট্রেন ব্যবহার করব?
যদি পারেন, গণপরিবহন এড়িয়ে চলুন। তা না হলে সঙ্গে করে স্যানিটাইজার নিয়ে যান। হাতল ধরার পরেই হাত পরিষ্কার করুন। নামার সঙ্গে সঙ্গে হাত পরিষ্কার করুন।
৪. অফিস তো ছুটি দিচ্ছে না। কী করব?
যতটা সম্ভব সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং করুন। দরকার হলে, মাস্ক ব্যবহার করুন।
৫. আমি কি সব জায়গায় যেতে পারব?
আপনি যতটা পারেন, বাসায় থাকুন। হাসপাতালে, বাজারসদাই করতে যেতে হতেই পারে। সিনেমা, থিয়েটার, প্রার্থনাগৃহ, জাদুঘর—সব বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এসব জায়গায় ভবিষ্যতে যাওয়া যাবে। এখন না।
৬. আমি কি ভ্রমণ করতে পারব?
না। আপনার এখন ভ্রমণ, দেশের ভেতরে বা বাইরে, করা নিষেধ। বাস, ট্রেন, প্লেন, জাহাজ, লঞ্চ লোকে ভরা থাকে। তবে যাদের কাজই ভ্রমণসংক্রান্ত, যেমন এয়ারলাইনসের ক্রু, ট্রেনের চালক, তাদের কথা আলাদা।
৭. আমি কি মাস্ক পরে থাকব?
সম্ভবত নয়। মাস্ক রোগীদের হাঁচি–কাশির ছিটা বাইরে যেতে দেয় না। কিন্তু বাইরের ভাইরাস আপনার নাকেমুখে প্রবেশ ঠেকাতে পারে না। আপনার নিজের হাঁচি–কাশি থাকলে দয়া করে বাইরে বের হবেন না।
৮. আমি কি ব্যায়াম করব?
হ্যাঁ। ঘরে। ঘরের বাইরে ফাঁকা জায়গায়। কিন্তু জিমে নয়।
৯. আমি কি চিকিৎসকের কাছে যেতে পারব?
খুব বেশি দরকার না হলে নয়। করোনা ভাইরাস সন্দেহ হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। প্রথমে ফোনে যোগাযোগ করবেন।
১০. রোগী দেখতে যাব?
না।
১১. আমি কি প্রবীণ স্বজন-পরিজনদের দেখতে যাব?
না। ফোনে খোঁজ নিন। বাজারসদাই লাগলে সাহায্য করুন।
১২. আমার বন্ধুরা কি আমার কাছে আসতে পারবে?
না। ফোনে কথা বলুন। ভিডিও চ্যাট করুন।
১৩. বাচ্চারা কি খেলতে পারবে?
বাইরে একা একা? হ্যাঁ। বাইরে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে? না। বাইরের বাচ্চাদের সঙ্গে নয়। কারণ, তারা পরস্পরকে ধরে ফেলবে। হাত ধোয়ার নিয়ম ভুলে যেতে পারে। স্লাইড ইত্যাদি কারও সঙ্গে ব্যবহার করা যাবে না। কাজেই পার্কেও নিয়ে যাওয়া যাবে না।
১৪. আমি কি আমার সন্তানের কাছে যেতে পারব?
হ্যাঁ। সাধারণভাবে হ্যাঁ। তবে যদি আপনি মনে করেন দুজনের একজন এরই মধ্যে সংক্রমিত হয়ে আছে, তাহলে দূরত্ব বজায় রাখুন।
১৫. আমার রুমমেট হাসপাতালে চাকরি করেন। আমি কি তার থেকে দূরে থাকব?
হ্যাঁ।
১৬. কত দিন এই রকম সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং করতে হবে?
সম্ভবত কমপক্ষে পাঁচ মাস। পরে আবারও করতে হতে পারে। এটা একেবারে সেরে যাবে না সহসা। ঢেউয়ের মতো আসতে থাকবে।
এই বিষয়গুলো মেনে চলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড