আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মহামারি করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) বিশ্বব্যাপী ১৩ হাজারের অধিক লোকের প্রাণহানি ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। দেশটির কবরস্থানগুলোতে বিপুল সংখ্যক মরদেহ দাফনের জায়গা হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত মৃতদেহ আসতে থাকায় সৎকার কাজে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মীরাও।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রাণঘাতী ভাইরাসটির থাবায় প্রাণ হারানোদের মরদেহ সৎকারের কাজে নিয়োজিত কর্মীরা এক রকম শারীরিক ও মানসিক চাপের মুখে পড়ছেন। এ কারণে কেবল জায়গা নয়, সংকট দেখা দিয়েছে মরদেহ দাফনকারী কর্মীদেরও। ভাইরাসটি ছোঁয়াচে হওয়ায় মৃতদের দাফনে সহায়তার জন্য পাওয়া যাচ্ছে না পর্যাপ্ত সংখ্যক নতুন কর্মী।
ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য মতে, দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৯৩ জন। তাছাড়া প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ইতালিতে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ মৃত্যুর তালিকায় করোনার উৎস চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। তাছাড়া ইতালিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৫৩ হাজার ৫৭৮ জন ছাড়িয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, উৎপত্তিস্থল চীনের সীমা অতিক্রম করে এর মধ্যে বিশ্বের অন্তত ১৮৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। বিশ্বব্যাপী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩ লাখ ৭ হাজার মানুষ। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ১৩ হাজার ৫০ জনে পৌঁছেছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। তাছাড়া শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
আরও পড়ুন : মহাবিপদের সামনে ভারত, ঝুঁকিতে বাংলাদেশ
বর্তমানে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ওডি/কেএইচআর