আন্তর্জাতিক ডেস্ক
অবশেষে নিজের শরীরে মহামারি করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) উপস্থিতি আছে কি না তা পরীক্ষা করিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (১৩ মার্চ) দিবাগত রাতে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ সময় ট্রাম্প তার শরীরের তাপমাত্রা পুরোপুরি স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করেন।
এ দিকে শনিবার (১৪ মার্চ) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক শন কনলি। তিনি জানান, ট্রাম্পের করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ফলাফল আমাদের হাতে এসেছে। এরই মধ্যে পরীক্ষায় নেগেটিভ রেজাল্ট পাওয়া গেছে। অর্থাৎ ট্রাম্পের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসের কোনো উপস্থিতি নেই।
সম্প্রতি ফ্লোরিডায় ব্রাজিলের কূটনীতিকদের সঙ্গে এক নৈশভোজে মিলিত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পরে সেখানে অংশ নেওয়া দুইজনের শরীরে মহামারি এই ভাইরাসের আলামত পাওয়া যায়। এমন আরও কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে ট্রাম্পও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কি না, জনমনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
মূলত এসবের প্রেক্ষিতে অবশেষে নিজের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির অস্তিত্ব আছে কি না তা পরীক্ষা করালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, উৎপত্তিস্থল চীনের সীমা অতিক্রম করে এর মধ্যে বিশ্বের অন্তত ১৫২টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। বিশ্বব্যাপী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৫৬ হাজার মানুষ। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৫ হাজার ৮৩৫ জনে পৌঁছেছে।
চলমান সংকটময় পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি মহামারি ভাইরাসটি মোকাবিলায় এরই মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল অঙ্কের অর্থ বরাদ্দের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে ‘মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এমনকি ইউরোপকে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল বলেও দাবি করেছে সংস্থাটি। চীনের চেয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোতে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার বাড়তে থাকায় ডব্লিউএইচওর প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়াসিস ঘোষণাটি দেন।
তিনি বলেছেন, ইউরোপ এখন মহামারির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজারের অধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। যা আমাদের জন্য একটি করুণ মাইলফলক।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। তাছাড়া শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
আরও পড়ুন : করোনায় নিউ ইয়র্কে প্রথম বাংলাদেশি শনাক্ত
বর্তমানে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ওডি/কেএইচআর