অধিকার ডেস্ক
ঢাকার আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার দূর্গাপুর বড় রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের এক গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে গেলেও তার মৃত্যু হয়েছে মিশরে। এ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মধ্যেও।
সংসারে সুখ আনতে গত ১ এপ্রিল স্ত্রী মিসেস বেগমকে সৌদি আরব পাঠান স্বামী আব্দুল আজিজ। চার সন্তানের জননী বেগম কীভাবে সৌদি আরব থেকে মিশরে গেলেন, কীভাবে তার মৃত্যু হলো এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তার স্বামী আব্দুল আজিজ।
আজিজ তার স্ত্রী বেগমের সৌদি আরব থেকে মিশরে যাওয়া ও কীভাবে মারা গেলেন এই রহস্য উদঘাটনসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন। এ জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদনও করেছেন তিনি।
গত ১৬ জুন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবর করা আবেদনে আব্দুল আজিজ উল্লেখ করেন, ‘…গত ১ এপ্রিল হান্নান ব্রাদার্স লিঃ (আরএল-৫৫২)-এর মাধ্যমে বৈধভাবে সৌদি আরবে গমন করেন মিসেস বেগম (পাসপোর্ট নং BY-0379678)। যাওয়ার পর নিয়মিত যোগাযোগ থাকলেও গত ১২ মে থেকে তার সাথে শত চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারিনি।
আব্দুল আজিজ জানান, গত ১৫ জুন দুপুর সোয়া ১টার দিকে তার মোবাইলে একটি ফোন আসে, যিনি ফোন করেন তিনি মো. আরিফুল ইসলাম। মিশরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বলছি বলে নিজেকে পরিচয় দেন। সে জানায় ২৯ মে মিশরে তার স্ত্রী মারা গেছে।
এ সময় আব্দুল আজিজ বলেন, আমার স্ত্রীকে পাঠালাম সৌদি আরবে, কীভাবে মিশরে গেল তা আমরা জানি না। আমার স্ত্রীর কোনো রোগব্যাধি ছিল না। যাওয়ার সময় শুধুমাত্র জ্বর, মাথা ব্যাথা ও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিয়ে দেই। আমার ৪ সন্তান রয়েছে। উল্লেখ্য যে, আমার স্ত্রী যাওয়ার পর দুই মাসের বেতন পাঠিয়েছে। আমি এই মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণ প্রার্থনা করছি। ’
বেগমের স্বামী এই প্রতিবেদককে জানান, আমার স্ত্রীকে পাঠিয়েছি সৌদি আরবে। শুনতেছি সেখান থেকে তার মালিক নাকি মিশরে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে নাকি মারা গেছে। সৌদি আরব থেকে মিশরে যাবে, এ রকম কিছু সে কখনো আমাকে বলেনি। মারা যাওয়ার ১২-১৩ দিন আগে থেকে তার সাথে (স্ত্রী) আমার যোগাযোগ বন্ধ। দুই মাসে ৪৫ হাজার টাকা পাঠিয়েছে। প্রথম মাসে ১০০০ রিয়াল বেতন ব্যাংকে পাঠানোর পর ফোন দিয়ে জানিয়েছে। পরের মাসে টাকা পাঠানোর পর জানায়নি কিছু। আর সে সুস্থ মানুষ। হঠাৎ কীভাবে মারা গেল, এর বিচার চাই। এজন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি।
এ ব্যাপারে মিসেস বেগমকে সৌদি আরবে পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সি হান্নান ব্রাদার্স প্রাঃ লিঃ-এর পরিচালক মো. নুরুল্লাহ জানান, সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই মিসেস বেগমকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছি। শুনছি সে নাকি মিশরে গিয়ে মারা গেছে।
পাঠালেন সৌদি আরব, মিশরে গেল কীভাবে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেটুকু জেনেছি সেটি হলো ওই মালিক (নিয়োগকর্তা) পারিবারিক ট্যুরে মিশরে গেছে। সাথে বেগমকেও নিয়ে গেছে। সেখানে যাওয়ার পর সে মারা গেছে। তবে কীভাবে মারা গেছে তা তিনি জানেন না।
নারীকর্মী মিসেস বেগম মারা যাওয়ার খবর তার স্বামীকে দেন মিশরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, এখনো ওই নারীকর্মীর লাশ হাসপাতালের মর্গে আছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে কাজ করছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মিসেস বেগম সৌদি আরব থেকে কীভাবে মিশরে গেলেন এবং কীভাবেই বা তার মৃত্যু হলো এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে মিশরস্থ দূতাবাস কর্মকর্তাদের মধ্যেও। এই দুটি প্রশ্নের উত্তর জানা এবং নারীকর্মী বেগমের লাশ বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যাপারে পররাষ্ট্র চ্যানেলে যোগাযোগ চলছে বলে জানা গেছে।
ওডি/এসএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড