অধিকার ডেস্ক ২০ জুন ২০১৯, ২৩:১০
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে তার মা সামসুন নাহার তসলিম গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। অভিযোগ, ২ বছরের বেশি সময় ধরে মা সামসুন নাহার নিজ বাড়ির বাইরে। স্বামী মারা যাওয়ার ১৮ দিন পর মেয়ে তুরিন আফরোজ তাকে উত্তরার নিজ বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। নিজ বাড়িতে ফেরার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে ল রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে তুরিন আফরোজের মা সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তুরিন আফরোজের ছোট ভাই শাহনেওয়াজ শিশির উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে সামসুন নাহার তসলিম বলেন, ২ বছর ৩ মাস ১৯ দিন ধরে আমি আমার বাড়ির বাইরে। আমার স্বামী মারা যাওয়ার ১৮ দিন পরে তুরিন আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তুরিনের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের প্রতিবাদ করাই আমার দোষ তার।
মেয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তুরিন আফরোজের মা বলেন, ‘আমার স্বামী অবসরে যাওয়ার পর থেকেই বাড়িভাড়ার টাকায় আমাদের সংসার, ওষুধ খরচ চলত। এরপর ওর বাবা মারা যাওয়ার পর তুরিন বাসা ভাড়ার টাকা জোর করে তুলে নেয়। অপরিচিত লোকদের নিয়ে রাত-বিরাতে ঘরে ঢোকে। রোয়ান-ভাড়াটিয়ারা অভিযোগ করলে তার সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া লাগত। এ সব বিষয়ে নিষেধ করলে ডিজিএফআই, র্যাব, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে আমাদের ভয় দেখাত। বলত ওরা সবাই তার বন্ধু। কোনোকিছু করলে ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করার ভয় দেখাত।’
সামসুন নাহার তসলিম বলেন, আমি তো আইনের ধারা বুঝি না। তুরিন আরও বলত, পৃথিবীর যেখানেই থাকো ধরে নিয়ে আসব। আর তার গানম্যান দিয়ে ভয় দেখাত। আমি গ্রামের বাড়ি নীলফামারী যেতে পারি না। সে সেখানে দায়িত্ব নিয়ে গ্রামের বাড়ির জমিজমা ও বাড়ি কুক্ষিগত করেছে। প্রতিবাদ করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানার প্রসঙ্গ টানত।
তুরিনের মা আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী তিনি তো একজন মা। আমরা জানি, উনি অন্যায়-অবিচারকে প্রশ্রয় দেন না। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চাই। আমার শরীর ভীষণ খারাপ। কিডনির ৬৫ শতাংশ অকেজো। ডায়াবেটিকস আছে। ওষুধ কেনার পয়সা বাড়িভাড়া থেকে পেতাম সেটাও তুরিন আফরোজ কেড়ে নিয়েছে। দেশে থাকার জায়গা নেই এখানে-সেখানে থেকে বেড়াই।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুন রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার সহোদর ছোট ভাই শাহনওয়াজ আহমেদ শিশির।
এর আগে ১ জানুয়ারি বাসা দখলের অভিযোগে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জজ আদালতে তুরিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শাহনওয়াজ। ওই মামলায় বলা হয়, ২০১৭ সালের ২ মার্চ পুলিশ দিয়ে ভয় দেখিয়ে মা শামসুন নাহার ও ভাড়াটিয়াদের বাসা থেকে বের করে দেন তুরিন। নিজেকে বাসার মালিক দাবি করে জমির দলিলপত্রও তিনি দখলে নিয়েছেন। শিশির সম্পত্তি নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হবে বলে মাকে হুমকি দেন তুরিন।
এর আগেও ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর তুরিনের বিরুদ্ধে জিডি করেন তার ছোট ভাই।
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ছিলেন। তখন তার বিরুদ্ধে আসামি ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে গোপন বৈঠক করার অভিযোগ ওঠে। এরপর তুরিনকে ট্রাইব্যুনালের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ওডি/এমআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড