নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্প্রতি হস্ত ও কারুশিল্প ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আড়ংকে জরিমানা করে দেশব্যাপী আলোচনায় আসা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার দিলেন ‘ভয়ানক তথ্য’। তিনি জানান, রাজধানীর ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখা হয় এবং এগুলো দেদারসে বিক্রি হচ্ছে।
সোমবার (১০ জুন) সকালে ফার্মগেটের খামারবাড়িতে ‘বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস’ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজক বাংলাদেশ সুপারমার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, অধিদপ্তরের নিয়মিত বাজার তদারকির গত ছয় মাসের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রাজধানীর প্রায় ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীতে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার দায়ে অনেক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শাহরিয়ার বলেন, এ ধরনের প্রতারণা রোধে দেশজুড়ে তদারকি দল গঠন করেছে অধিদপ্তর। তদারকি দল কখনো ক্রেতা সেজে, কখনো ঝটিকা অভিযানের মাধ্যমে ফার্মেসিগুলোকে নজরদারিতে রেখেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশি-বিদেশি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে রাজধানীসহ সারাদেশ সয়লাব। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে মেয়াদ বৃদ্ধির লেভেল লাগিয়ে বাজারজাত করছেন। ওষুধের প্যাকেটে থাকা নকল মেয়াদকে আসল ভেবেই ক্রেতারা কেনেন। এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হচ্ছেন রোগীরা। অনেক রোগী মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছেন। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রোগ সাড়ানোর পরিবর্তে স্বাস্থ্যগত নতুন জটিলতায় তৈরি করছে।
মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ স্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা। তারা বলছেন, এসব ওষুধ মানুষের জীবন না বাঁচিয়ে উল্টো কেড়ে নিচ্ছে।
সচেতনভাবে রোগীদের মৃত্যুর মুখে পতিত করা হত্যার শামিল। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনে আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছেন তারা।
জানা গেছে, সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছে। এসব ওষুধ হার্ট, ক্যান্সার, কিডনি ও অপারেশনেও ব্যবহার হচ্ছে। কিছুদিন আগে প্রায় ১৬১ ধরণের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের খোঁজ পান ভ্রাম্যমাণ আদাত। যার মধ্যে ছিল ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষধ। এসব ওষুধে ২০২০ ও ২০২১ সালের নতুন মেয়াদের লেভেল লাগিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আড়ংয়ের উত্তরা শাখায় একই পোশাক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ দাম বাড়ানোর অভিযোগে সাড়ে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সঙ্গে আউটলেটটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৩ জুন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আড়ংকে জরিমানা করার পরপরই শাহরিয়ারকে বদলি করা হয় সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর খুলনা জোনে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বদলির ওই আদেশ বাতিল করেন।
ওডি/ এমআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড