অধিকার ডেস্ক ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৪০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জাতীয় নেতাদের নামে ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায় এবং গুজব সৃষ্টি, ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার অভিযোগে ৫ জনকে আটক করেছে র্যাব। আর এই প্রতারণাকে তারা শিল্প হিসেবে নিয়েছে।
সাইবার অপরাধের অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-২ ব্যাটালিয়নের একটি দল তাদের আটক করে।
আটককৃতরা হলেন- মো. ওমর ফারুক (৩০), মো. সাব্বির হোসেন (২৪), মো. আল আমিন (২৭), মো. আমিনুল ইসলাম (২৫) এবং মো. মনির হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম-ছবি, দলীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ছবি ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র দিয়ে ৬টি ভুয়া ফেসবুক আইডি খোলে প্রতারক চক্র। আইডিতেগুলোতে তারা নিজের মোবাইল নাম্বারও দিতেন।
তিনি বলেন, আইডিগুলো দেখে কৌতূহলবশত অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার জন্য ফোন দিতেন। ফোন রিসিভ করে প্রতারকরা বলতো প্রধানমন্ত্রীর হয়ে আমরা তার আইডি পরিচালনার দায়িত্বে আছি। বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য আমরা সংগ্রহ করে থাকি, আমাদের নিজস্ব একটি টিম-ওয়ার্কও আছে। বিভিন্ন প্রার্থী ও নেতাদের সম্পর্কে আমরা তথ্য সংগ্রহ করে থাকি, তথ্য সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীসহ শীর্ষ নেতাদেরকেও আমরা অবহিত করে থাকি। এই কাজ প্রধানমন্ত্রীই আমাদের দিয়েছেন।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, এরপর যদি কেউ যোগাযোগ করতে চায় তাদের ইনবক্সে কথাগুলো বলার জন্য অনুরোধ করা হয় সিকিউরিটির জন্য। এরমধ্যে তারা অনেককে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়েছে। সম্প্রতি সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থীদের খুঁজে খুঁজে বিভিন্ন ভুয়া রিপোর্ট দিচ্ছে। নারী প্রার্থীদের টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়েছে। তারা বিভিন্ন নারী নেত্রীদের ফোন করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলতো।
মুফতি বলেন, গ্রেফতার ওমর ফারুক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ৬টি, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে ১টি, স্পিকার, আওয়ামী সমর্থক গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন জাতীয় নেতাদের নামে সর্বমোট ৩৬টি পেজ ব্যবহার করতেন। তিনি মানুষের কাজ পাইয়ে দেয়ার নাম করে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করেছে।
তিনি আরও বলেন, আসামিরা প্রতারণাকে শিল্পতে পরিণত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নামের অ্যাকাউন্টগুলোতে তারা শেখ হাসিনার নাম-ছবিসহ পোস্ট দিয়েছেন। গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য সরকারের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নের ছবি পোস্ট করেছেন। তাদের পোস্টগুলোতে একটা করে মোবাইল নম্বর দেয়া থাকতো। এটা ছিল ওমর ফারুকের নিজের নম্বর। এই পোস্টগুলো দেখে অনেকেই অনেক সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলার জন্য ফোন করতেন। কেউ সমস্যা সমাধানে, কেউ অন্য কারণে কথা বলার জন্য ফোন দিতেন।
তিনি জানান, গ্রেফতার হওয়া সাব্বির পেশায় সাইবার যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ। সাব্বিরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে ২টি ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ৪টি মামলা রয়েছে। তিনি তারেক জিয়া সাইবার ফোর্স, দেশনেত্রী সাইবার ফোরাম পেজের অ্যাডমিন ছিলেন। সম্প্রতি তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার লক্ষে তারেক জিয়া সাইবার ফোর্স, দেশনেত্রী সাইবার ফোরামের জায়গায় শেখ হাসিনার পরামর্শ ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল নাম সংযোজন করে তাতে নিরাপদ সড়ক চাই ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের উস্কানিমূলক ভিডিও পোস্ট করে আসছিলেন।
মুফতি মাহমুদ জানান, গ্রেফতার মো. আল আমিন পেশায় বেসরকারি চাকুরিজীবী। তিনি সাইবার অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি পেজের অ্যাডমিন। তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য জাতীয় নেতাদের ছবি বিকৃত আকারে প্রকাশ, বিভিন্ন জাতীয় প্রতিষ্ঠান যেমন-বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, পুলিশকে ঘিরে মিথ্যা তথ্য সন্নিবেশ করে তাতে ভুয়া ছবি সুপার অ্যানিমেশনের মাধ্যমে ফেসবুকে পোস্ট করে থাকেন।
ওডি/ এজেড
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড