নিজস্ব প্রতিবেদক
এবার যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়া ওরফে পিউয়ের আস্তানায় যাতায়াতকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পাপিয়াকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া নেতা ও তার অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে পাপিয়ার কেমন সম্পর্ক ও অর্থ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাপিয়ার মোবাইল ফোন থেকে প্রায় ১১ জন সংসদ সদস্যের (এমপি) নম্বরে সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ করার তথ্য পাওয়া গেছে।
এদের ব্যাপারেও তথ্য সংগ্রহ করছে তদন্তকারী সংস্থা। পাপিয়ার অপকর্মের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজনকে শিগগিরই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এজন্য এমপিসহ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পাপিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা তদন্তের জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
রাজনীতির আড়ালে অর্থ পাচার, অবৈধ অস্ত্র, জাল টাকা সরবরাহ, চাঁদাবাজি, জিম্মি করে টাকা আদায়, তদবির বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, প্রতারণা ও নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করানোসহ নানা অভিযোগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনসহ চারজনকে। পাপিয়া ও তার স্বামী এখন ১৫ দিনের রিমান্ডে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর হয়েছে। বর্তমানে ডিবি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে পাপিয়ার সহযোগী ও আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতাদের নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ সূত্র জানায়, রাজনীতির সূত্র ধরেই ঢাকায় এসে যুব মহিলা লীগের তিন নেতাসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে পাপিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায় রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেলগুলোতে সুন্দরী নারীদের দিয়ে অনৈতিক কাজ করাতেন তিনি।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শামীমা নুর পাপিয়ার অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের কয়েকজনকে শিগগিরই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এজন্য পাপিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ থাকা সংসদ সদস্যসহ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। পাপিয়ার ফোনের কললিস্টে ১১ জন এমপির নম্বরে বেশি যোগাযোগের তথ্য মিলেছে। তাদের কার সঙ্গে পাপিয়ার কী ধরনের সম্পর্ক, সেই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : ভিআইপিদের পাপিয়া প্রথমে যেখানে নিয়ে যেতেন
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, পাপিয়ার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেছে র্যাব। মামলাগুলো গত বুধবার রাতে ডিবিতে স্থানান্তর হয়েছে। ওই সব মামলায় পাপিয়া রিমান্ডে রয়েছেন। তার অপকর্মের সঙ্গে কারা জড়িত, কারা প্রশ্রয় দাতা, তার অর্থের উৎস কী, তার বেপরোয়া হয়ে ওঠার পেছনে কে বা কারা আছেন, সবই তদন্ত করে দেখা হবে। অনৈতিক বিষয় থাকলে সেটাও তদন্ত করে দেখা হবে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ফার্মগেট এলাকায় পাপিয়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড, বিদেশি ডলার, ৫ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করে র্যাব।
তিনটি পৃথক মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে পাপিয়া তার বিভিন্ন অপকর্মের বিষয়ে অবাক করার মতো নতুন নতুন তথ্য দিচ্ছেন।
ওডি/টিএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড