নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর কাফরুলের ইমাননগরে থার্টিফার্স্ট নাইটে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ কার্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত তিনজন হলেন—জনি দেওয়ান ওরফে মুরগি জনি, আতিক দেওয়ান ও জাহাঙ্গীর আলম। প্রথম দুজন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী আর জাহাঙ্গীর কার্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন ওই ভুক্তভোগী। ইতোমধ্যে ধর্ষণের শিকার ওই ভুক্তভোগীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ইতোমধ্যে নিরাপত্তাকর্মী জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলার পর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ জানান, তার স্বামী নির্মাণশ্রমিক, থাকেন ইমাননগরে। থার্টিফার্স্ট নাইটে তারা বেড়াতে বের হন। ভোর ৪টার দিকে নাশতা করতে মিরপুর-১৩ নম্বরের ওপেক্স গার্মেন্টসের সামনে যান। সেখানে কোনো হোটেল/রেস্তোরাঁ খোলা না পেয়ে জব্বারের চিপা নামের একটি গলি ধরে হাঁটছিলেন তারা। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী মুরগি জনি ও আতিক দেওয়ান তাদের পথ আটকে প্রশ্ন করেন, এত রাতে রাস্তায় কেন?
তখন তার স্বামী জানতে চান, রাতে হাঁটা নিষেধ কি না? এমন প্রশ্নে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন জনি ও আতিক। স্বামী-স্ত্রীকে এক প্রকার টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান পাশের স্বেচ্ছাসেবক লীগ কার্যালয়ে। সেখানে তার স্বামীকে বেদম মারধর করা হয়; জানতে চাওয়া হয়, তাদের বিয়ের কাবিননামা আছে কি না। তরুণী জানান, সঙ্গে নেই, বাসায় আছে। মুরগি জনি তখন তার স্বামীকে সেখানে আটকে রেখে তরুণীর সঙ্গে তাদের বাসার দিকে রওনা হন কাবিননামা দেখার জন্য। সঙ্গে ছিলেন নিরাপত্তাকর্মী জাহাঙ্গীর আলমও।
তরুণী বাসায় তাদের কক্ষে প্রবেশ করতেই জনিও প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেয়। এর পর তরুণীর মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে তিনি চিৎকার করেন। জনি তখন ওই তরুণীকে হুমকি দেন, রাজি না হয়ে চিৎকার করলে ক্লাবে বেঁধে রেখে আসা তার স্বামীকে হত্যা করা হবে। তিনি তখন স্বামীকে বাঁচাতে জনির লালসার শিকার হতে বাধ্য হন। পরে ওই তরুণীকে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ কার্যালয়ে ফেরেন জনি। এর পর একটি সাদা কাগজে ওই দম্পতির সাক্ষর রেখে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
তরুণী জানান, তিনি থানায় মামলা করতে চাইলেও স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা বিচারের আশ্বাস দিয়ে তাদের থানায় যেতে দেননি। কিন্তু বিচার দূরের কথা, এখন তারা আছেন অব্যাহত হুমকির মুখে। উপায়ান্তর না পেয়ে শেষে তিনি গত শনিবার রাতে কাফরুল থানায় মামলা করেন।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, জনি ও আতিক সন্ত্রাসী প্রকৃতির, ক্ষমতাধরও। তারা গ্রেফতার না হওয়ায় আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার এসআই রবিউল আলম বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ওডি/এমআই
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড