নিজস্ব প্রতিবেদক
বৃষ্টি ও সুমন সম্পর্কে তারা শালী-দুলাভাই। পারিবারিক এ মধুর সম্পর্ক একপর্যায়ে রূপ নেয় অনৈতিক বিন্দুতে। বড় বোনের স্বামী সুমনের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে বৃষ্টির অনৈতিক সম্পর্ক চলে আসছিল।
একসময় ঘটনা জানাজানি হয়। পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। বোনের সংসার বাঁচাতে দুলাভাই সুমনের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় বৃষ্টি। ঠিক হয় বৃষ্টির বিয়ে। এর ফলে ক্ষিপ্ত হয় লোলুপ দুলাভাই সুমন। প্রতিশোধের নেশায় সৃষ্টি হয় খুনি হয়ে ওঠার গল্প।
তাদের বিষয়টি সমঝোতার কথা বলে বৃষ্টিকে নিয়ে ঘটনার দিন মগবাজারের আবাসিক হোটেল বৈকালীতে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে রুম ভাড়া নেয় সুমন। হোটেলে তাদের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সুমন বৃষ্টির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাইলে বাধ সাধে বৃষ্টি। ক্ষিপ্ত সুমন বৃষ্টির ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
গত ১৬ জুলাই সোমবার রাজধানীর মগবাজারের ওই আবাসিক হোটেলে একটি কক্ষ থেকে বৃষ্টির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দুলাভাই রিয়াজ ওরফে সুমনকে (২৯) রাজধানীর মিরপুর পাইকপাড়া থেকে গত মঙ্গলবার ১৭ জুলাই রাতে গ্রেফতার করে র্যাব-৩। গতকাল বুধবার ১৮ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান।
তিনি বলেন, আসামি সুমন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। সুমন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক। ২০১০ সালে ভিকটিম বৃষ্টির মেজো বোন হাসনার সাথে তার বিয়ে হয়। গত তিন চার বছর ধরে সে তার শ্যালিকাকে উত্ত্যক্ত করত এবং একপর্যায়ে সেটা অনৈতিক সম্পর্কে গড়ায়। বিষয়টি পরিবারে জানাজানি হয়, একসময় বৃষ্টির অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু বিষয়টি সহ্য করতে না পেরেই বৃষ্টিকে হোটেলে ডেকে নিয়ে হত্যা করে সুমন।
তিনি জানান, হত্যার পর ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে বৃষ্টির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হোটেল রুমের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। পরে সে বুদ্ধি করে হোটেলের বাইরে যায় এবং প্রায় এক ঘণ্টা পর ফিরে আসে। ফিরে আসার পর বৃষ্টি আত্মহত্যা করেছে বলে চিৎকার করতে থাকে। পরে হোটেলের লোকজন এলে সুমন নিজেই ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা লাশের মাথায় পানি দিতে থাকে এবং একপর্যায়ে সুমন কৌশলে হোটেল থেকে পালিয়ে যায়। বৃষ্টি মারা গেছে বিষয়টি জানার পর হোটেল কর্তৃক থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
র্যাব জানায়, খবর পেয়ে বৃষ্টির স্বজনেরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ছুটে যান এবং তার লাশ শনাক্ত করেন। পরে বৃষ্টির বাবা মো. আনোয়ার হোসেন রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। বিষয়টি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও ছায়াতদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সুমনকে গ্রেফতার করে র্যাব-৩। জানা গেছে, বৃষ্টি মহাখালী সাততলা বস্তিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড