ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রিকেট বিশ্বকাপ নামক মহারণের ফাইনাল আজ। মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড। কার হাতে উঠবে ১২তম ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা? বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরের শিরোপা কার হাতে উঠবে তা জানার জন্য একটি মাত্র ম্যাচের অপেক্ষা। রবিবার (১৪ জুলাই) ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত লর্ডসে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ৩টায়।
ধুরন্ধর জেসন রয়, ক্ল্যাসিক্যাল জো রুট, খ্যাপাটে বেন স্টোকস, সেনসেশনাল জোফরা আর্চার, না আধুনিক পেস বোলিংয়ের ত্রাস ট্রেন্ট বোল্ট, না কি নীরবে সার্ভিস দিয়ে যাওয়া অলরাউন্ডার জিমি নিশাম, চূড়ান্ত মঞ্চে জ্বলে উঠবেন কে? তবে শেষ হাসি কার? যিনিই হাসুন আর যেই জ্বলে উঠুক- ২৩ বছর পর ক্রিকেট যে নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পেতে যাচ্ছে সেটি তো সেমি-ফাইনালে নির্ধারিত হয়ে গেছে।
নিজেদের মাটিতে পাঁচবার বিশ্বকাপ আয়োজন করলেও এখনো একবারও শিরোপা জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। তবে এবারে বেশ ভালো সুযোগ এসেছে তাদের সামনে। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে ইংলিশরা ফাইনালের টিকিট কেটেছে।
সর্বশেষ ১৯৯২ আসরে নিজ মাঠে বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছে ইংল্যান্ড। দীর্ঘ ২৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো আবারও নিজ মাঠে ফাইনাল খেলতে নামছে মরগানের নেতৃত্বাধীন দলটি।
বুধবার (৯ জুলাই) বিশ্বকাপের প্রথম সেমি-ফাইনালে ফেভারিট ভারতের বিপক্ষে রিজার্ভ ডেতে গড়ানো ম্যাচে ১৮ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। মাত্র ২৪০ রানের টার্গেট দেওয়ার পর বোলিংয়ে দুর্দান্ত শুরু হয় কিউইদের। কিন্তু মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রবীন্দ্র জাদেজার চমৎকার জুটিতে ম্যাচে উত্তেজনা ধরে রাখে ভারত। কিন্তু এই জুটি ভাঙতেই কাঙ্ক্ষিত জয় নিশ্চিত করে কেন উইলিয়ামসনের দল।
আগের আসরে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে উঠা অজিরা শিরোপা জিতেছিল। এবার সেমিতে সেই ভারতকেই হারিয়ে ফাইনালের টিকেট পাওয়া নিউজিল্যান্ড যদি লর্ডসে প্রথমবারের মতো বিশ্বসেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করে তবে বিস্মিত হওয়ার কিছুই নেই।
দু’দলেরই নামের পাশে এতদিন চিরদুঃখী ট্যাগ লেগে ছিল। কেউই আগে বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। এবার অন্তত একটি দলের সেই আক্ষেপ ঘুচবে। এর আগে তিনবার ১৯৭৯, ১৯৮৭ এবং ১৯৯২ আসরের ফাইনালে উঠেও ট্রফি ছোঁয়া হয়নি ইংল্যান্ডের। আর নিউজিল্যান্ড গতবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে সুযোগ হারিয়েছে।
বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ইংলিশদের প্রথম দেখা ১৯৭৫-এর বিশ্বকাপে। এই আসরের আয়োজক ছিল ইংল্যান্ড; ট্রেন্ট ব্রিজে সেইবার ৮০ রানে জয় পেয়েছিল স্বাগতিকরা। পরের আসরেও কিউইদের হারায় ইংল্যান্ড; এই আসরের আয়োজকও ইংল্যান্ড। সেমি-ফাইনালে ৯ উইকেটে কিউইদের হারিয়ে ফাইনালে যায় ইংলিশরা। যদিও ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৯২ রানে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করে।
এরপরের আসরেও কিউইদের সঙ্গে জয় পায় ইংল্যান্ড; ১০৬ রানের বড় জয় ছিল স্বাগতিকদের (এই আসরের আয়োজকও ইংল্যান্ড)। তবে একই আসরে নিউজিল্যান্ড প্রথম জয় পায়। ২ উইকেটে ইংলিশদের প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে হারাতে সক্ষম হয় কিউইরা। এই থেকেই শুরু নিউজিল্যান্ডের জয়ের ধারা; এরপর বিশ্বকাপের চারটি আসরে জয়হীন ছিল ইংলিশরা।
৩২ বছর জয়ের খোঁজে থাকা ইংল্যান্ড ফের কিউইদের হারাতে সক্ষম হয় বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরে। নিজেদের মাটিতেই জয়ের স্বাদ পায় তারা। গ্রুপ পর্বে ১১৯ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে কিউইরা। এই জয়ে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে স্বাগতিকদের। ফাইনালে একই দলের সঙ্গে লড়াই; সেই সঙ্গে তাদের সুযোগ প্রথমবারের মতো শিরোপা ছোঁয়ার।
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড মুখোমুখি :
মোট ম্যাচ ৯টি ইংল্যান্ড জয়ী ৪টি নিউজিল্যান্ড জয়ী ৫টি
এ তো গেলো বিশ্বকাপের ফলাফল; এবার দেখে নেওয়া যাক সব মিলিয়ে ওয়ানডেতে কারা এগিয়ে; বিশ্বকাপের মতো ওডিআইতেও কিউইদের জয়ের পাল্লা ভারী। আজ থেকে ৪৬ বছর আগে এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামে ইংল্যান্ড। ১৯৭৩ সালে সেন্ট হেলেন অনুষ্ঠিত হওয়া প্রথম দেখায় ৭ উইকেটের জয় পায় ইংরেজরা। এর ঠিক ছয় বছর পর প্রথম জয় পায় কিউইরা। ১৯৮৩ সালে মেলবোর্নে নিউজিল্যান্ডের জয়টি ছিল ২ রানের।
এই দুদলের সবশেষ দেখা বিশ্বকাপেই। যেখানে জয় ইংলিশদের। তবে ওডিআইতে গেল বছর দুদলের শেষ দেখায় ইংল্যান্ড জিতেছে ৭ উইকেটে। পাঁচ ম্যাচে ওই সিরিজটিতে জয় পায় স্বাগতিকরা (৩-২ ব্যবধানে)।
সবমিলিয়ে ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড মুখোমুখি :
মোট ম্যাচ ৯০টি ইংল্যান্ড জয়ী ৪১টি নিউজিল্যান্ড জয়ী ৪৩টি ম্যাচ টাই ২টি ওডি/এএপি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড