• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অর্জন ও আক্ষেপের প্রথম ছয় ম্যাচ

  ক্রীড়া ডেস্ক

২১ জুন ২০১৯, ০৫:৪৮
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল (ছবি : সংগৃহীত)

চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ছয়টি ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে দুইটিতে জিতেছে আর হেরেছে তিনটিতে। বাকি একটিতে বৃষ্টির কারণে কোন ফলাফল হয়নি। পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। মাশরাফিদের জন্য সেমিফাইনাল কষ্টসাধ্য হলেও অসম্ভব নয়। তবে ছয় ম্যাচেই একের পর এক দলীয় ও ব্যক্তিগত মাইলফলকের জন্য এ বিশ্বকাপ টাইগারদের কাছে স্মরনীয় হয়ে থাকবে।

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হয়। নিজেদের প্রথম ম্যাচে কেনিংটন ওভালে ব্যাটিংয়ে নেমেই টাইগারারা গড়ে ইতিহাস। শুধু বিশ্বকাপেই নয়, নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় ৩৩০ রান সংগ্রহ করে তারা। দলের হয়ে সে ম্যাচে ম্যাচসেরা সাকিব আল হাসান ৭৫, মুশফিকুর রহীম ৭৮, মাহমুদউল্লাহ ৪৬ ও সৌম্য সরকার ৪২ রান করেন। সাকিবদের দেয়া ৩৩১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ থেকে ২১ রান দূরে ৩০৯ রানে থামে প্রোটইয়াদের ইনিংস। এ ম্যাচে ৩৩০ রান করে ২০১৫ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে করা নিজেদের ৩২৯ রানের সংগ্রহকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। এছাড়া বিশ্বকাপে তাদের আগের সর্বোচ্চ সংগ্রহটি ছিল ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২২ রান।

দ্বিতীয় ম্যাচে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ একই মাঠ কেনিংটন ওভালে খেলতে নামে শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এ ম্যাচেও প্রথম ব্যাটিং করতে নামলেও সাকিব ছাড়া বাকিরা জ্বলে উঠতে না পারায় বাংলাদেশের ইনিংস থামে মাত্র ২৪৪ রানে। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং স্বর্গে মামুলি টর্গেটে দিয়েও শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছে টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডের আট উইকেট ফেলে দিলেও শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হাসতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরুতে মুশফিকের শিশুসুলভ ভুলে রান আউটের হাত থেকে বেঁচে যান নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। মুশফিকের এ ভুলের মাশুল হিসেবে ম্যাচটাই ফসকে যায় মাশরাফিদের হাত থেকে। জীবন পেয়ে উইলিয়ামসন আরেক ব্যাটসম্যান টেইলরকে সাথে নিয়ে গড়েছিলেন মাচজয়ী ১০৫ রানের জুটি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এ হারের আক্ষেপ এখনও রয়েছে, সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলে সে আক্ষেপ ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে থাকবে আরও বহুবছর।

তৃতীয় ম্যাচে কার্ডিফে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয় টাইগাররা। প্রথমবার টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় মাশরাফি। ব্যাটিংয়ে নেমে ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় তাণ্ডব চালায় বোলারদের উপর। তার ১৫৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংসের উপর ভর করে ৩৮৬ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় তারা। জবাবে মাত্র ২৮০ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ম্যাচ হারলেও প্রাপ্তির খাতায় যোগ হয়েছে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরি। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডারকে বাকিরা যোগ্য সঙ্গ দিতে না পারায় ১০৬ রানে ম্যাচ জিতে নেয় ইনিংলিশরা।

টানা দুই ম্যাচ হেরে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া বাংলাদেশ চতুর্থ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্রিস্টল মাঠে খেলতে নামার প্রস্তুতি নেয়। অপেক্ষাকৃত দূর্বল দল শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে আবারও সেমিফাইনালের লড়াইয়ে ফেরার আশায় বুক বাঁধে মাশরাফি বাহিনী। তবে বৃষ্টির বাঁধায় খেলা মাঠেই গড়ায়নি। ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় এক পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় টাইগারদের।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে পরের ম্যাচে টন্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে ১০৫ রানে অলআউট করে বিশ্বকাপে দুরন্ত সূচনা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টন্টনের ছোট বাউন্ডারি লাইনও চিন্তার ভাজ ফেলেছিল মাশরাফিদের কপাল। ম্যাচে টসে জিতে আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় টাইগার অধিনায়ক। লুইসের ৮০, শাই হোপের ৯৬ রানের সাথে হেটমায়ারের ঝড়ো ৫০ রানে ৩২১ রানের বড় সংগ্রহ পায় ক্যারিবিয়ানরা। জিততে হলে নিজেদের রেকর্ড ভেঙ্গেই জিততে হবে এমন সমীকরনে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। এ বিশ্বকাপে সাকিব আর বাংলাদেশ প্রতি ম্যাচে মাঠেই নামে বোধহয় রেকর্ড ভাঙ্গার জন্য। লিটনকে সঙ্গে নিয়ে সাকিব গড়ে তুলেন ১৮৯ রানের রেকর্ড জুটি। মাত্র ৪১.৩ ওভারেই বাংলাদেশ তিন উইকেট হাতে রেখে টপকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়। ৩২১ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতে গড়ে তুলে নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তারা করে জয়ের রেকর্ড। এটি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তারা করে পাওয়া জয়। আগেরটিও ছিল বাংলাদেশের। ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের দেয়া ৩১৯ রানের জবাবে বাংলাদেশ করেছিল ৩২২।

ট্রেন্টব্রীজের ব্যাটিং স্বর্গে ষষ্ঠ ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। প্রথম ব্যাট করে ওয়ার্নারের ১৬৬ ও উসমান খাজার ৮৯ রানের উপর ভর করে স্কোরবোর্ডে ৩৮১ রান করতে সমর্থ হয় অজিরা। জবাবে বাংলাদেশও বুক চিতিয়ে লড়ে যায়। ৫০ ওভার শেষে টাইগাররা এ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করা নিজদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান ৩৩০ কে টপকে ৩৩৩ রান করে। তবে ম্যাচটি ৪৮ রানে হেরে যায় তারা। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার দুই ইনিংস মিলিয়ে এ ম্যাচে সর্বমত রান হয় ৭১৪ যা বিশ্বকাপের ইতিহাসেই সর্বোচ্চ। ম্যাচের শুরতেই ওয়ার্নারের সহজ ক্যাচ ফেলে দেন সাব্বির। এরপর ওয়ার্নারের কাছেই হেরে যায় বাংলাদেশ। টাইগারদের উইকেটকীপার ব্যাটসম্যান মুশফিক এ ম্যাচে সেঞ্চুরি করলে তা কেবল হারের ব্যবধান কমাতে পেরেছে।

ওডি/এমএমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড