• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০১৯

ক্রিকেট বিশ্বে বর্তমানে কে সেরা অধিনায়ক?

  আল-আমীন পাটোওয়ারী

১৯ জুন ২০১৯, ১২:৩৭
বাঁ থেকে মাশরাফি, কোহলি, ফিঞ্চ ও মরগান (ছবি : সংগৃহীত)
বাঁ থেকে মাশরাফি, কোহলি, ফিঞ্চ ও মরগান (ছবি : সংগৃহীত)

বর্তমান বিশ্বে ক্রিকেট দুনিয়ায় সেরা অধিনায়ক কে? এমন প্রশ্নে টাইগার ভক্তরা মাশরাফি বিন মর্তুজার কথা বলবেন। আবার ভারতীয়রা বলবেন বিরাট কোহলির কথা। তবে আসলে বর্তমান বিশ্বে নিজ দেশের জার্সি গায়ে অধিনায়ক হিসেবে কে সেরা- পুরো দুনিয়ার ক্রিকেট ভক্তদের সামনে এমনই একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি আন্তর্জাতিক রেডিও এবং টেলিভিশন ব্রডকাস্টিং সার্ভিস ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ)।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) ভয়েস অব আমেরিকা নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে জানতে চেয়েছেন- বর্তমান সময়ে বিশ্বে অধিনায়ক হিসেবে কে সেরা? যেখানে তারা চারজন অধিনায়কের ছবি যুক্ত করে জরিপ করছেন। শুরুতেই বাংলাদেশি অধিনায়ক মাশরাফির ছবি দিয়েছেন। এরপর আছেন ভারতীয় কাপ্তান কোহলি; তিন নম্বর ছবিতে আছেন অজিদের দলনেতা অ্যারন ফিঞ্চ; আর ইংলিশ অধিনায়ক ইউইন মরগান আছেন সবশেষে।

পোস্টটিতে বাংলাদেশ এবং ভারতের ক্রিকেট প্রেমীরা নিজ দেশের অধিনায়ককে এগিয়ে রাখছেন। কমেন্ট বক্সে ঘুরলে নজরে পড়বে মাশরাফি আর কোহলিকে নিয়েই হৈ-হুল্লোড় বেশি সবার! মাঝে মাঝে ফিঞ্চ আর মরগানের নাম দেখা যায়!

আসুন অধিনায়ক হিসেবে এই চার কাপ্তানের পরিসংখ্যান (ওয়ানডে হিসেবে) জেনে নেই-

মাশরাফি বিন মর্তুজা (বাংলাদেশ) :

বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা অধিনায়ক মাশরাফি। এটা অনায়াসে টাইগার ভক্তরা স্বীকার করেন। ম্যাশের নেতৃত্বে আমূল পাল্টে যায় বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষা। ইনজুরি নিয়েও নিজের পারফরম্যান্স ধরে রাখার পাশাপাশি দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা, উদ্দীপ্ত করা, এসব ব্যাপার মাশরাফির নেতৃত্বগুণ আলাদা করে চিনিয়ে দেয়।

১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর নড়াইল জেলায় জন্ম নেওয়া ম্যাশ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম বোলিং স্তম্ভ ও একদিনের আন্তর্জাতিকে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০১০ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৮১টি ম্যাচে টাইগারদের নেতৃত্বে দিয়েছেন মাশরাফি। যেখানে ৪৬টি ম্যাচ জিতেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা; বিপরীতে হেরেছে ৩৩টি আর বাতিলের খাতায় গেছে ২টি ম্যাচ।

১৯৮৬ সালের পর থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব করেছেন মোট ১৩ জন। যেখানে কেবল মাশরাফিই সেরা। ম্যাচ জয়ের দিক থেকে তার পর আছেন হাবিবুল বাশার (২০০৪-২০০৭); ৬৯টি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করে টাইগারদের জয় এনে দিয়েছেন ২৯টি ম্যাচে; হেরেছেন ৪০টি ম্যাচে! তবে মাশরাফির পর অধিনায়ক হিসেবে সফল বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ২০০৯ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ৫০টি ওডিআই ম্যাচে টাইগারদের দায়িত্ব নিয়ে জয় পেয়েছেন ২৩টি ম্যাচে; বিপরীতে হেরেছেন ২৬টি ম্যাচে।

২০০১ সালের ২৩ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের জার্সি এক দিনের ক্রিকেটে মাশরাফির অভিষেক হয়। দীর্ঘ ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে খেলেছেন ২১৩টি ওয়ানডে ম্যাচ। এই টাইগার কাপ্তান বল হাতে পেয়েছেন ২৬৬টি উইকেট। আর ব্যাট হাতে করেছেন ১৭৫৭ রান। মাশরাফির বেস্ট বোলিং ফিগার ২৬ রানে ৬ উইকেট।

বিরাট কোহলি (ভারত) :

অধিনায়কত্বের দায়িত্ব কাঁধে নিলে অনেকে চাপে পড়েন। স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেন না। সেদিক দিয়ে সফল বিরাট। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অধিনায়ক থাকাকালীন কোহলির ওয়ানডে গড় ৭৫.০০। আর শুধুই ব্যাটসম্যান হিসেবে গড় ৯৩.০৭! ৩০ বছর বয়সী এই ক্রিকেট তারকা ২০১৩ সালে ভারতের দায়িত্ব বুঝে নেন; এরপর ৭১টি ওয়ানডে ম্যাচে অধিনায়কত্ব করে ৫২টি ম্যাচেই বাজিমাত করেছেন! হেরেছেন মাত্র ১৭টি ম্যাচে; একটি ম্যাচ টাই হয় আর পরিত্যক্ত হয় একটি ম্যাচ!

তবে অধিনায়ক হিসেবে ভারতের হয়ে সফল মহেন্দ্র সিং ধোনি। ২০০৭ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টিম ইন্ডিয়াকে নেতৃত্বে দিয়েছেন ২০০টি ম্যাচে; যেখানে ভারতকে জয় দিয়েছেন ১১০টি ম্যাচে। বিপরীতে ৭৪টি ম্যাচ হেরেছে আর ৫টি ম্যাচ টাই ও ১১টি বাতিল হয়েছে। তার অধীনে ভারতের ম্যাচ জয়ের হার ৫৯.৫২ শতাংশ। ম্যাচ জয়ের দিক থেকে ধোনির থেকে এগিয়ে কোহলি (৭৫.০০ শতাংশ)।

নীলরঙা ভারতীয় '১৮' নম্বর জার্সি গায়ে রান মেশিন কোহলি ক্রিকেট দুনিয়ার একে একে সবাইকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। এক দিনের ক্রিকেটে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তিনে আছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ২৩০টি ম্যাচে ১১০২০ রান করেছেন কোহলি!

অ্যারন ফিঞ্চ (অস্ট্রেলিয়া) :

স্টিভেন স্মিথ আর ডেভিড ওয়ার্নার নিষিদ্ধ হওয়ার পর যেন গভীর অমানিশার অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছিল অজি ক্রিকেট। তখন টিম পাইনকে করা হয় নতুন অধিনায়ক। কিন্তু তিনি দলকে তুলে আনতে ব্যর্থ হন। এরপর নতুন অধিনায়কের শরণাপন্ন হলো টিম অস্ট্রেলিয়া। ২০১৭ সালে মারকুটে ব্যাটসম্যান ফিঞ্চের ঘাড়ে তুলে দেওয়া হয় নতুন দায়িত্ব।

যদিও শাস্তি কাটিয়ে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের আগে দলে ফিরেছেন ৫১টি ম্যাচে অজিদের অধিনায়কত্ব করা স্মিথ। কিন্তু তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। বিশ্বকাপের মিশনে ফিঞ্চের অধীনেই ইংল্যান্ড আসে তারা। ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৩টি ম্যাচে অজিদের অধিনায়কত্ব করেছেন ফিঞ্চ। যেখানে ১৪টি ম্যাচেই জয় পেয়েছেন জাস্টিন ল্যাঙ্গারের ছেলেরা। বিপরীতে ৯টি ম্যাচে হেরেছে।

এবারের বিশ্বকাপের আসরে ফিঞ্চের অধীনে দুর্দান্ত খেলছে অজিরা। এবারের আসরে তাদের ফেভারিট হিসেবেই ধরা হয়। ২০১৩ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া ফিঞ্চ এখন পর্যন্ত মোট ১১৪টি ম্যাচ খেলে ৪৩৯৫ রান করেছেন। ১৪টি সেঞ্চুরি আর ২৩টি ফিফটির সমন্বয়ে।

ইউইন মরগান (ইংল্যান্ড) :

মরগানের অধীনে এবারের বিশ্বকাপ আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছে ইংলিশরা। ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইংরেজদের দায়িত্ব নিয়েছেন ১০৫টি ম্যাচে। ৬৫টি ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি ৩৩টি ম্যাচে হেরেছে তার দল। গেল বিশ্বকাপেও ইংলিশদের অধিনায়কত্ব করেছেন মরগান। সেবার বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের।

তবে এবারের বিশ্বকাপে আগের তুলনায় একদম আলাদা দল ইংল্যান্ড; নিজেদের মাটিতে বিশ্বকাপে আয়োজন সেই সঙ্গে ফেভারিটও তারা। এখন পর্যন্ত ফেভারিটদের মতই খেলছে তারা।

এইতো মঙ্গলবার (১৮ জুন) আফগানিস্তানের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। ইংলিশদের এই জয়ে মূল অবদান ছিল দলনেতা মরগানের! রেকর্ড ১৭টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৭১ বলে ১৪৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন তিনি। তার এই বড় স্কোরের ওপর ভর করে আফগানদের সঙ্গে ১৫০ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে ইংলিশরা।

ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার আগে একদিনের ক্রিকেটে এই আয়ারল্যান্ডের হয়ে অভিষেক হয়েছিল মরগানের (২০০৬ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে)। তিন বছর আইরিশদের হয়ে খেলার পর ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় তার। এই আইরিশম্যান এখন পর্যন্ত ২২৭টি (এর মধ্যে আয়ারল্যান্ডের হয়ে ২৩টি ম্যাচে করেছেন ৭৪৪ রান) ম্যাচে করেছেন ৭২২৬ রান।

ওডি/এএপি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড