জুবায়ের আহম্মেদ
চলতি মাসের শেষ দিনে ফের নিজ ভূমিতে ফিরতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক আসর 'আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯'। বিশ্বকাপের প্রথম তিন সংস্করণ এবং ১৯৯৯ সালের পর পঞ্চমবারের মতো ইংল্যান্ডে বসছে এই মর্যাদার লড়াই। ১৯৭৫ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় নানা রেকর্ড যেমন গড়া হয়েছে, তেমনি ভাঙাও হয়েছে অনেক। ইতিহাসের পাতা থেকে তুলে এনে সে সব রেকর্ডের দিকে নজর দেওয়া যাক আরও একবার। 'দৈনিক অধিকার'- এর পাঠকদের জন্য আজ থাকছে দ্বিতীয় পর্ব।
সবচেয়ে বেশি শিরোপা- অস্ট্রেলিয়া (৫ বার)
ক্রিকেটের প্রাচীন পরিবারের সদস্য তারা। আধুনিক ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ডের সঙ্গে বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচটি তারাই খেলেছিল। কিন্তু ইংল্যান্ড নয়, বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দলের নাম অস্ট্রেলিয়া। এখন পর্যন্ত হওয়া ১১ আসরের ৫টির শিরোপাই গেছে অজি শিবিরে। ১৯৮৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে অ্যালান বোর্ডারের নেতৃত্বে প্রথমবার শিরোপার স্বাদ পায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর ১৯৯৯ থেকে টানা তিন আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি। প্রথমবার দলনেতা ছিলেন স্টিভ ওয়াহ। আর ২০০৩ ও ২০০৭ আসরে নেতৃত্বভার ছিল রিকি পন্টিংয়ের কাঁধে।
সবশেষ ২০১৫ বিশ্বকাপের শিরোপাও ঘরে তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। মাইকেল ক্লার্কের অধিনায়কত্বে। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জয় (৬২) এবং সবচেয়ে বেশি জয়ের শতকরা হিসাবটাও (৭৫ শতাংশ) তাদের কাছেই থাকছে।
কেভিন ও'ব্রায়েন (ছবি : দ্য ন্যাশনাল)
সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়- আয়ারল্যান্ড বনাম ইংল্যান্ড (৩২৯/৭)
বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটন বলুন কিংবা অন্যতম সেরা ধ্রুপদী লড়াই বলুন, ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড বনাম আয়ারল্যান্ড ম্যাচটি সেই তালিকায় অবশ্যই থাকবে। বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জোনাথন ট্রটের ৯২ ও ইয়ান বেলের ৮১ রানের সঙ্গে কেভিন পিটারসেনের ৫৯ রানে ভর করে ৩২৭ রান সংগ্রহ করেছিল থ্রি লায়ন্সরা।
জবাব দিতে নেমে প্রথম বলেই দলের মূল ব্যাটিং ভরসা উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডকে হারায় আইরিশরা। দ্বিতীয় উইকেটে পল স্টার্লিং ও এড জয়েসের ৬২ রানের জুটি লড়াইয়ের আভাস দিলেও এক পর্যায়ে ১১১ রানেই ৫ উইকেট হারায় তারা। পরের গল্পটা কেবলই কেভিন ও'ব্রায়েনের। অ্যালেক্স কুসাকের সঙ্গে ১৬১ রানের জুটি গড়েন তিনি। ৫০ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে হয়ে যান বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক। শেষ পর্যন্ত ৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে ৩২৯ রান তুলে ম্যাচ জিতে নেয় আয়ারল্যান্ড।
সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ- অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান (৪১৭/৬)
এই এক ম্যাচেই দুটি রেকর্ড নিজেদের করে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ২০১৫ বিশ্বকাপের 'এ' পুলের ম্যাচে পার্থে খেলতে নেমেছিল আফগানিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়া। ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ খুব দ্রুত সাজঘরে ফিরলেও স্টিভেন স্মিথকে নিয়ে ২৬০ রানের বড় জুটি গড়েন ডেভিড ওয়ার্নার। সাজঘরে ফেরার সময় স্কোরবোর্ডে ওয়ার্নারের নামের পাশে ছিল ১৭৩ রান। স্মিথ সাজঘরে ফেরেন ব্যক্তিগত ৯৫ রানে। আর শেষে ঝড় তোলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। মাত্র ৩৯ বলে তিনি করেন ৮৮ রান।
কানাডা-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের একটি মুহূর্ত (ছবি : সংগৃহীত)
তাতে অস্ট্রেলিয়া দাঁড় করায় বিশ্বকাপের দলীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে তারা তোলে ৪১৭ রান। জবাবে আফগানিস্তান অলআউট হয় মাত্র ১৪২ রানে। মিচেল জনসন নেন ৪ উইকেট। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতে নেয় ২৭৫ রানের বিশাল ব্যবধানে, যা বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়ের রেকর্ড।
সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ- কানাডা বনাম শ্রীলঙ্কা (৩৬)
বিশ্বকাপে খুব বেশিবার অংশ না নিলেও লজ্জার একটি রেকর্ড গড়ে ফেলেছে উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডা। ২০০৩ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে পার্লেতে তারা মুখোমুখি হয়েছিল শ্রীলঙ্কার। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চামিন্দা ভাস এবং প্রভাত নিশাঙ্কার তোপে মাত্র ৩৬ রানে গুটিয়ে যায় কানাডা। চামিন্দা ভাস ১৫ রানে নেন ৩ উইকেট। নিশাঙ্কা ছিলেন আরও ভয়াবহ। ১২ রান দিয়ে তিনি শিকার করেন ৪ উইকেট। ম্যাচটি শ্রীলঙ্কা জিতে নেয় ৯ উইকেটে।
সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের সেরা দশে বাংলাদেশের নামও আছে দুবার। ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১১ বিশ্বকাপে ৫৮ রান এবং একই আসরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৮ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। এই দুটি স্কোর আছে যথাক্রমে ৪ এবং ৯ নম্বরে।
ওডি/এসএইচ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড