শফিকুলকে ২০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন

হলুদ রঙের ইয়াবা, ক্যাসিনো সামগ্রী, একটি বিদেশি পিস্তল, বিপুল পরিমাণ জুয়া খেলার সরঞ্জামসহ আটক কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজের বিরুদ্ধে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন পুলিশ।

শফিকুলের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা অস্ত্র ও মাদক আইনের পৃথক দুই মামলায় দশ দিন করে বিশ দিনের রিমান্ড আবেদন করে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালতে এ রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পারভেজ।

তিনি বলেন, ধানমন্ডি থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে করা পৃথক দুই মামলায় শফিকুল আলমের বিরুদ্ধে দশ দিন করে বিশ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ধানমন্ডি থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আশরাফ আলী বলেন, আজ বেলা ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালতে এই রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার সকালে শফিকুলের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে র‌্যাব। ধানমন্ডি থানার ডিউটি অফিসার কামরুন নাহার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া মামলাটির নম্বর ২০ ও মাদক আইনে দায়ের হওয়া মামলার নম্বর ২১।

এর আগে শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে শফিকুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবে অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযান শেষে শুক্রবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক আশিক বিল্লাল জানান, অভিযানের সময় শফিকুলের কাছে সাত প্যাকেট হলুদ রঙের ইয়াবা পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে এ যাবৎকালে এ ধরনের ইয়াবা পাওয়া যায়নি। এ ইয়াবায় কোনো প্রকার গন্ধ নেই। এ নতুন আবিষ্কার।

তিনি আরও বলেন, অভিযানে একটা বিদেশি পিস্তলসহ তিন রাউন্ড গুলি পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ক্যাসিনোতে খেলার কয়েন, স্কোরবোর্ড ও ৫৭২ প্যাকেট তাস উদ্ধার করা হয়েছে। কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবে যেসব জিনিসপত্র পাওয়া গেছে ধারণা করা হচ্ছে আগে এ ক্লাবে ক্যাসিনো খেলা হতো।

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে র‌্যাবের হাতে আটক হন ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুই মামলায় তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

এছাড়া রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে আটক করে র‌্যাব। শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে জি কে শামীমের নিকেতনের ডি ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর বাসা ঘিরে ফেলে র‌্যাব।

এর আগে নিকেতন এলাকায় জি কে শামীমের আরেকটি বাসা থেকে তাকে ডেকে আনা হয়। পরে তাকে আটক করেই অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযান শেষে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে শামীমকে র‌্যাব কার্যালয়ে নেওয়া হয়। শামীমের সঙ্গে তার সাত দেহরক্ষীকেও আটক করা হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হয় এক কোটি ৮০ লাখ নগদ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার ওপরে এফডিআর (স্থায়ী আমানত)। এর মধ্যে তার মায়ের নামে ১৪০ কোটি টাকা ও ২৫ কোটি টাকা তার নামে।

ওডি/এআর