• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দাফনের আট মাস পর গৃহপরিচারিকার লাশ উত্তোলন

  ফেনী প্রতিনিধি

০৪ জুলাই ২০১৯, ১৪:৩১
লাশ
কবর থেকে নিহতের লাশ উত্তোলন করা হচ্ছে (ছবি : দৈনিক অধিকার)

দাফনের আট মাস পর আদালতের নির্দেশে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মটুয়া কলোনি বড় কবরস্থান থেকে শিশু গৃহপরিচারিকা ফাহিমা আক্তারের (১৪) লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।

বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফেনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোবায়দা আক্তার, সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. আলতাফ হোসেন ও ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ডিএনএ টেস্টের জন্য লাশটি উত্তোলন করা হয়। নিহত ফাহিমা আক্তার লালমনিরহাট জেলার আদিত্য মাড়ী থানার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী নুর জামান বাবুলের মেয়ে।

মামলার বাদী ও নিহতের মা কোহিনুর বেগম জানান, তিনি দীর্ঘদিন যাবত ফেনী শহরের মিজান রোডে ওয়াহিদুর রহমানের ছেলের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। ওয়ালি উল্যাহ হক টাওয়ারের নবম তলার বাসায় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাজ করতেন। একপর্যায়ে তিনি তার ছোট মেয়ে ফাহিমা আক্তারকে লেখাপড়া করানোর প্রতিশ্রুতিতে ওয়ালি উল্যাহর স্ত্রীর কাছে গৃহপরিচারিকার কাজে দেন। কাজে দেওয়ার পর থেকে ফাহিমাকে ওয়ালি উল্যাহ নানা কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে।

বিষয়টি ওয়ালি উল্যাহর স্ত্রীকে জানালে তিনি তার স্বামীকে বকা দিলে আর উত্ত্যক্ত করবেনা এমন প্রতিশ্রুতি দেয়। ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর প্রতিদিনের মতো কোহিনুর বেগম গৃহপরিচারিকার কাজ শেষে বাসায় ফেরার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওয়ালি উল্যাহর স্ত্রী তাকে মোবাইলে ফোন করে জানায় তার মেয়ে ফাহিমা আক্তার ফাঁসি দিয়ে মারা গেছে। কোহিনুর বেগম ও তার স্বজনরা বাসায় গিয়ে দেখেন তার মেয়ের লাশ বারান্দায় গ্রিলের সঙ্গে ঝুলে আছে। খবর পেয়ে ফেনী মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওয়ালি উল্যাহ ও তার স্ত্রী এবং নিহত ফাহিমার স্বজনদের থানায় নিয়ে যায়।

১৪ নভেম্বর পুলিশ নগদ ১৫ হাজার টাকা ও ফাহিমার লাশ কোহিনুর বেগমকে দিয়ে বাড়িতে নিয়ে দাফন করার কথা জানান। এমনকি এই বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে মাদকের মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করে দেওয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন কোহিনুর বেগম। পরে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি কোহিনুর বেগম বাদী হয়ে ফেনীর নারী শিশু আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে গতকাল বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফেনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোবায়দা আক্তার, সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. আলতাফ হোসেন ও ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ডিএনএ টেস্টের জন্য ফাহিমা আক্তারের লাশ উত্তোলন করে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোবায়দা আক্তার জানান, নিহত ফাহিমা আক্তারের পরিবার আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করলে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতের নির্দেশে লাশটি উত্তোলন করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. আলতাফ হোসেন বলেন, ডিএনএ টেস্টের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে ঘটনাটি হত্যা না কি আত্মহত্যা।

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট একরামুল হক ভূঁঞা বলেন, ফাহিমা আক্তারকে নির্যাতন শেষে হত্যা করে লাশটি ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে খুনিরা। আমরা অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

ওডি/এসজেএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড