• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নুসরাত হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

  ফেনী প্রতিনিধি

২৭ জুন ২০১৯, ১০:০২
নুসরাত জাহান রাফি
নিহত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি

ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) শুরু হবে।

গত (২০ জুন) বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালত মামলাটির চার্জ গঠন করে পরবর্তী শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আজ (২৭ জুন) নির্ধারণ করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) হাফেজ আহমেদ বলেন, ‘দণ্ডবিধির ৪/১/৩০ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার বিচার কাজ শুরু ও আজ ২৭ জুন এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।’ বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বেলা ১১টায় অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয় এবং বিকাল সাড়ে ৪টায় তা শেষ হয়। অভিযোগ গঠনকালে গ্রেফতার ১৬ আসামি আদালতে হাজির ছিলেন।

ওই দিন ফেনী জেলা জজ আদালতের পিপি হাফেজ আহাম্মদ জানান, আদালতের নুসরাত হত্যা মামলার ১২ আসামি চার্জশিট থেকে অবমুক্তি চেয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের সে আবেদন খারিজ করে দেন। পরবর্তী শুনানিতে নুসরাতের বড় ভাই ও মামলার বাদী মাহমুদুল নোমান, নুসরাতের দুই সহপাঠী নিশাত ও ফুর্তিকে তলব করেন। এদিকে মামলার অন্যতম আসামি সন্তানসম্ভবা কামরুন নাহার মনি ওই দিন আদালতে তার চিকিৎসার আবেদন করলে বিচারক মনির সুচিকিৎসা নিশ্চিতের আদেশ দেন। এছাড়া মামলা চলাকালীন সময় এজলাসে তাকে চেয়ারে বসার ব্যবস্থা করেন।

একই দিন আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. হানিফ মজুমদার বলেন, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে গাফিলতি রয়েছে। পিবিআইয়ের তদন্ত যথার্থ নয়। প্রকৃত হত্যার সঙ্গে জড়িতরা এ মামলায় সংযুক্ত হয়নি।

মামলার বিচার কাজ শুরুর প্রায় এক ঘণ্টার পর আসামিদের আইনজীবীরা এ আদালতে চার্জ গঠনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু করলে বিচারকের নির্দেশের কথা বলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম সংবাদকর্মীদের আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেন। তিনি বলেন, বিচারকের নির্দেশ রয়েছে এ মামলা চলাকালে কোনো সংবাদকর্মীকে আদালত কক্ষে থাকা যাবে না।

আসামিপক্ষের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট গেয়াস উদ্দিন নান্নু ও কামরুল হাসান জানান আদালতের পরিবেশ শান্ত করতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ অভিযুক্ত আসামিদের মুখে তাদের কথা শুনতে শুরু করেন।

এ সময় আসামিরা বিচারককে জানান, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযুক্ত আসামিদেরকে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করিয়েছেন।

গত ২৯ মে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৮০৮ পৃষ্ঠাসংবলিত নথি ও চার্জশিট দাখিল করেন। এর পর গত ৩০ মে মামলার ধার্য তারিখে আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত শুনানি না করে ওই মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে পাঠানোর আদেশ দিয়ে ১০ জুন মামলার শুনানির দিন ধার্য করেন। পরে ১০ জুন আদালত চার্জশিট আমলে নিয়ে ২০ মে চার্জ গঠনের দিন ধার্য করেন।

নুসরাত হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদদৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম ওরফে শরিফ, ইফতেখার হোসেন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, হাফেজ আবদুল কাদের ও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নুসরাতের মাদ্রাসার সহ-সভাপতি রুহুল আমিন।

এ মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মেয়েকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মামলাটি তুলে না নেয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে সিরাজ উদদৌলা সহযোগীরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল মারা যায় নুসরাত। এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।

ওডি/এসজেএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড