গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের বিরুদ্ধে মামলা

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের আইটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে ইউনিয়ন গঠনের কারণে চাকরিচ্যুত করায় দুই কর্মচারী এই মামলা করেন। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়।

বুধবার (১৯ জুন) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এই দুইটি মামলা দায়ের করা হয়। গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের দুই কর্মচারী বদরুল আলম ও জিল্লুর রহমান এই মামলা করেন। তারা গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মামলার আসামিরা হলেন- ১) গ্রামীণ কমিউনিকেশন ২) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নাজনীন সুলতানা ৩) উপ-মহাব্যবস্থাপক খন্দকার আবু আবেদীন।

মামলার বাদী বদরুল আলম ও জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আসামিরা আমাদের চাকরিচ্যুত করে আইন অনুযায়ী অপরাধ করেছেন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার জারির আবেদন করেছি এবং তাদের আইন অনুযায়ী শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছি’

মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী বদরুল আলম ২০০৪ সালের এপ্রিলে ও জিল্লুর রহমান ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে গ্রামীণ কমিউনিকেশনসে স্থায়ী পদে এম, আই, এস অফিসার (কম্পিউটার অপারেটর) হিসেবে কাজে যোগদান করেন। এরপর শ্রমিক হিসেবে নিজেদের সংগঠিত হওয়া ও নিজেদের কল্যাণের জন্য তারা ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

সে অনুযায়ী তারা অন্যান্য সহকর্মীদের নিয়ে ‘গ্রামীণ কমিউনিকেশনস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (প্রস্তাবিত) নামে একটি ইউনিয়ন গঠন করে এবং আইন অনুযায়ী তা রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদনও করেন।

২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল ট্রেড ইউনিয়নটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য মহাপরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়নে আবেদন করেন। ৯ জুন তা প্রত্যাখ্যান হয়। মামলার বাদী বদরুল আলম প্রস্তাবিত ইউনিয়নের সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ইউনিয়নের বিষয়ে জানার পর মামলার আসামিরা তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে থাকে এবং স্বাভাবিক দায়িত্বপালনে বাধা প্রদান করতে থাকে।

এরূপ অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করায় বাদীদের প্রকাশ্যে নানা ধরনের হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয়। আসামিদের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার বেআইনিভাবে বাদীদের প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কাজ থেকে বিরত রাখেন এবং কোনো কারণ ছাড়াই তাদের চাকরিচ্যুত করেন।

বিষয়টি লিখিতভাবে শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালককে অবগত করেন বাদীরা। পরবর্তীতে কাজের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে বহুবার যোগাযোগ ও অনুনয়-বিনয় করলেও তাদেরকে আর প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে দেওয়া হয় নি। শুধুমাত্র ইউনিয়ন গঠন করার কারণে আসামিরা বাদীদের দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান করে এবং কাজ থেকে বিরত রাখে। সেই সঙ্গে বেআইনিভাবে চাকরিচ্যুত করে, যা বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৮৬ এবং ১৯৫ (ঘ) ধারার লঙ্ঘন।

উল্লেখ্য, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুস কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত (ISO 9001:2015) সার্টিফাইড, গ্রামীণ ব্যাংকের একমাত্র আইটি প্রতিষ্ঠান ‘গ্রামীণ কমিউনিকেশনস’ সারা বাংলাদেশে ২৫৬টি তথ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র এ আইটি সেবা দিয়ে থাকে। গ্রামীণ কমিউনিকেশনসে ১০০০ কর্মী রয়েছেন।

ওডি/এমএ