অধিকার ডেস্ক ২০ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:৫৬
ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের আসামি জাবেদ হোসেনকে আরও তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সারাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে জাবেক হাজির করা হয়।
এসময় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শাহ আলম তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরো ৫ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে জাবেদের নাম উল্লেখ করেন।
তারা জানান, জাবেদ সরাসরি কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করে। জাবেদ নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। এর আগে জাবেদকে গত ১৩ এপিল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিন তাকে ৭ দিনের রিমান্ড দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। পরে ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয় অধ্যক্ষকে। গ্রেফতারের এই ঘটনার পর ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম (এইচএসসি) পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে গেলে সেখানে পরিকল্পিতভাবে ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শরীরে জীবন্ত আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওই সময় বোরকা পরিহিত ৪-৫ জন ওই ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত কক্ষ থেকে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে কয়েকজন বোরকা পরা নারী পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার চেষ্টা করে। তারা জানান, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে না নেয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ তথ্য ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় পুলিশকেও জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ওই দিন বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষ তার অফিসের পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে ছাত্রীকে ডেকে নেন। পরীক্ষার আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ। পরে পরিবারের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হন অধ্যক্ষ। সেই মামলা তুলে না নেয়ায় অধ্যক্ষের লোকজন ওই ছাত্রীর গায়ে আগুন দেয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
ওডি/এসএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড