সুবর্ণচরে গৃহবধূ গণধর্ষণ; ধর্ষক রুহুল আমিনের জামিন আদেশ প্রত্যাহার

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনার মূলহোতা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনের জামিনের আদেশ প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট।

শনিবার (২৩ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে আগে গত (২১ মার্চ) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এক বছরের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান রুহুল আমিন।

গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনার মূলহোতা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন জামিন পাওয়ায় হতবাক হয়েছিলেন নির্যাতনের শিকার পরিবার।

এ বিষয়ে মামলার বাদী নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী সিরাজ মিয়া বলেছিলেন, ‘আমরা হতবাক। কীভাবে তাকে হাইকোর্ট জামিন দিলেন আমরা জানি না। এর চেয়ে বড় কষ্টের আর কি আছে। এত বড় অপরাধী কীভাবে জামিন পেল?’

এ দিন কোন যুক্তিতে আসামিকে জামিন দেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় বলেন, আবেদনকারীর আইনজীবী আদালতে বলেছেন যে, মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) রুহুল আমিনের নাম নাই। তাছাড়া মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। এসব বিষয় তুলে ধরে জামিন চাওয়া হয়েছে।

আসামির আইনজীবী রাষ্ট্রপক্ষকে বিভ্রান্ত করেছেন বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আসলে জামিন আবেদনে উল্লেখ আছে এনএক্স-১৭ নম্বর কোর্টের কথা। অর্থাৎ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে আবেদনটি শুনানির জন্য ফাইল হয়েছে। ফলে আবেদনটির অনুলিপি গেছে ওই কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরে।

বিশ্বজিৎ রায় আরও বলেন, ‘যেদিন জামিন হয় সেদিন আসলে আমরা বুঝতেই পারিনি, কার জামিন হয়েছে।’ আদালতে রুহুল আমিনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. আশেক-ই-রসুল।

উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের মধ্যবাগ্যা গ্রামে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে চল্লিশোর্ধ এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ঐ নারীর অভিযোগ, ভোটের সময় নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এর পর রাতে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনের ‘সাঙ্গপাঙ্গরা’ বাড়িতে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।

চরজব্বর থানায় ঐ নারীর স্বামীর করা মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা তার বসতঘরে ভাঙচুর করে, ঘরে ঢুকে বাদীকে পিটিয়ে আহত করে এবং সন্তানসহ তাকে বেঁধে রেখে দলবেঁধে ধর্ষণ করে তার স্ত্রীকে।

ধর্ষণের শিকার ঐ নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে চরজুবলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।