অধিকার ডেস্ক ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:০৮
পূর্ণাঙ্গ আদেশ না লেখায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা নিয়ে বিভক্ত আদেশটি সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে ফেরত পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বুধবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে তিনি আদেশটি ফেরত পাঠান।
এর আগে মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে বিভক্ত আদেশ দেয় হাইকোর্ট বেঞ্চ। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বৈধ বললেও কনিষ্ঠ বিচারপতি মো.ইকবাল কবির বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।
এর আগে তিনটি আসনে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা নিয়ে বিভক্ত আদেশ দেয় হাইকোর্ট। এক আদেশে হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতির রেফাত আহমেদ খালেদা জিয়ার আবেদন মঞ্জুর করে তাকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি ইকবাল কবির খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে দেন।
মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে তিনটি আসনে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেয় হাইকোর্ট।
আদেশের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘বেঞ্চের প্রিজাইডিং জজ খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু অপর বিচারপতি দ্বিমত পোষণ করেছেন। এখন নিয়ম অনুসারে আবেদনগুলো প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে। তিনি বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য অন্য বিচারপতির কাছে পাঠাবেন।’
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দণ্ডিত ব্যক্তির ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। সম্প্রতি বিএনপির ৫ নেতা ভোটে অংশ নেবেন উল্লেখ করে তাদের দণ্ড ও সাজা স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন বিএনপির এক নেতা। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি হাইকোর্টের একটি একক বেঞ্চ সাবিরা সুলতানা মুন্নী নামের এক প্রার্থীর সাজা ও দণ্ড স্থগিত করে তাকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আপিল বিভাগ ওই আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন।’
অর্থাৎ আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দণ্ডিত ব্যক্তির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। এরপরেও দণ্ডিতদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে তা হবে সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদের পরিপন্থি।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করায় খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয় ইসিতে। ইসি সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে খালেদা জিয়ার আপিল খারিজ করে সিদ্ধান্ত দেয়। এতে বলা হয়, উনি দণ্ডিত এ কারণে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই।
এ আইনজীবী বলেন, সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদ যদি ব্যাখ্যা করা হয় তাহলে সেটা হলো চূড়ান্ত আপিল নিষ্পত্তির পর। এখানে খালেদা জিয়ার আপিল উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। এখনও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা কোথায়। এছাড়া দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল বিচারাধীন থাকার পরেও ভোটে অংশ নেওয়ার নজির মহীউদ্দীন খান আলমগীরের ক্ষেত্রে রয়েছে। পরে হাইকোর্ট আদেশের জন্য দিন ধার্য করে দেন।
কারাগারে থাকা খালেদা জিয়াকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে প্রার্থী করেছিল বিএনপি। তবে বাছাইয়ের সময় খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাও ইসিতে নাকচ হয়ে যায়। তাই হাইকোর্টে আইনি লড়াইয়ে নামেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড