নিজস্ব প্রতিবেদক
বহুল আলোচিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা যাচ্ছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। আদালত বলেন, বুয়েট ছাত্র ফাহাদ হত্যা মামলার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। এজন্য কিছু আনুষ্ঠানিকতা আছে। এ সম্পর্কিত আনুষ্ঠানিকতা শেষে সরকার গেজেট জারি করলে মামলাটি বদলির আদেশ হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এ মামলাটির অভিযোগ গঠনের জন্য শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু শুনানি হয়নি। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ দেননি।
এরপর আদালত চার্জ গঠনের জন্য আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এ সময় আসামির পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। তবে জামিন বিষয়ে শুনানি না করে বদলি আদালত বলেন, আবেদনগুলো বদলি আদালত নিষ্পত্তি করবেন।
গত ২১ জানুয়ারি মামলাটি আমলে নিয়ে চার্জ গঠনের জন্য বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দিন ধার্য রেখেছিলেন আদালত। গত ১২ জানুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন। ওইদিনই প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বদলি আদালতে মামলাটি স্থানান্তর হয়।
গত বছর ১৩ নভেম্বর মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। গত ১৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানা অনুযায়ী গ্রেপ্তার করতে না পারায় গত ৩ ডিসেম্বর তাদের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়। ৫ জানুয়ারির মধ্যে ক্রোকি পরোয়ানা তামিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন : ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণ : মজনুর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৩ ফেব্রুয়ারি
এরপর গত ৫ জানুয়ারি পলাতক আসামিদের হাজিরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের একদিন আগে মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম নামের পলাতক এক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।
এ মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, বহিষ্কৃত উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, বহিষ্কৃত সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মোজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, ইসতিয়াক হাসান মুন্না, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির ও আকাশ হোসেন, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হোরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, এস এম মাহমুদ সেতু, এজাহারের বাইরের ছয় আসামি হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের গ্রন্থণা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, মাহামুদ সেতু ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম।
মামলায় পলাতক রয়েছেন আরও তিন আসামি। এরা হলেন- মাহমুদুল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ও মুজতবা রাফিদ। এর মধ্যে মোস্তবা রাফিদের নাম এজাহারে ছিল না।
পলাতক বাকি আসামিরা হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার শুরু হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির লালবাগ জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান ১৩ নভেম্বর ২৫ জনের নামে এই মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এজাহার বহির্ভূত ৬ জন। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ২০১১ কক্ষে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে। এ ঘটনায় গত ৭ অক্টোবর আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ পরে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের সবাই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
ওডি/টিএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড