• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রাজশাহীতে যেভাবে চলছে মাছের পোনা নিধন

  রাজশাহী প্রতিনিধি

১৯ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:৫০
পোনা মাছ নিধন
সুতি জাল দিয়ে মা মাছসহ পোনা মাছ নিধন করা হচ্ছে ( ছবি : দৈনিক অধিকার )

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বারনই, ফকিন্নী, বাঘার বড়াল এবং তানোরের শিব নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ রোধসহ বাঁশের বেড়ায় (চ্যাগারের বেড়া) সুতিজাল ও কারেন্টজাল দিয়ে অবাধে চলছে মাছের পোনা নিধন।

এসব মাছের পোনা নিধনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শাখা নদীগুলোতে বেড়ে ওঠা প্রায় সব ধরনের মাছের বংশ বিস্তার। আর মাছ নিধনের এই কার্মযজ্ঞ প্রশাসনের নাকের ডগায় চললেও রহস্যজনকভাবে নিবর ভূমিকার রয়েছেন তারা।

রাজশাহীর এই শাখানদীগুলোর উৎপত্তিস্থল পদ্মা নদী। তবে নানা অব্যবস্থাপনা ও নজরদারির অভাবসহ নদীগুলোর পানির স্তর প্রতি বছর নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে এই শাখানদীগুলোও হারাচ্ছে তার জৌলুশসহ প্রাকৃতিক সম্পদ।

বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর, ভবানীগঞ্জ, মোহনগঞ্জ এলাকার আড়ৎসহ বিভিন্ন হাটবাজারে ছোট মাছের ঘাটতি দেখা গেছে। জানা গেছে মৎস নিধনকারী এসব সিন্ডিকেটে সংঘবদ্ধ হয়ে ভাড়াটে জেলে দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন অবৈধ কারেন্ট জালে বড় মাছসহ পোনা মাছ আহরণ করে চলেছে। আর সেই মাছগুলো রাজশাহী শহরসহ ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। এভাবে সংঘবদ্ধ একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে মাছ শিকারের ফলে ক্রমেই মৎস শুন্য হয়ে পড়েছে রাজশাহীর এই শাখা নদীগুলো।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে মাছ নিধনরোধে উপজেলা মৎস অফিসের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

স্থানীয় কৃষকরা জানায়, কতিপয় রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় প্রভাবশালীরা বাঁশের বেড়া দিয়ে সেখানে সুতি জাল মাছ নিধনের পাশাপাশি পানির গতিপথ বন্ধ করা এবং বর্ষার পানি সময়মত নেমে না যাওয়ায় শস্য মৌসুমে আবাদ নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন তারা।

বাগমারা উপজেলার ১৫ থেকে ১৬ জন মৎস্যজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বারানই ও ফকিন্নী নদীতে বর্ষা মৌসুমের শুরুতে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়। বর্ষার শুরু থেকে উপজেলার পীরগঞ্জ ফকিন্নী নদী ও তাহেরপুরের বারনই নদীর কামারখালি, শ্রীপুর, বাগমারা, একডালা, মোহনগঞ্জ, মাদারীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় বাঁশের বেড়া নির্মাণ করে পানির স্রোত বাড়িয়ে তার মুখে স্থাপন করা হয়েছে এক ধরনের সুতিজাল। তাতে আটকা পড়ছে শামুক, ঝিনুক, রেণু ও মা মাছসহ সব ধরনের মাছ। তারা বিভিন্ন সময় সেখানে বাঁশের বেড়া দিয়ে পানির স্বাভাবিক গতি পথ বন্ধ করে রাখে।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, মাছের বংশ বিস্তারের জন্য সরকার প্রতিবছর মাছের প্রজনন মৌসুম জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত খাল, বিলসহ নদীতে ছোট মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে দেয়। এ সময় জেলেদের দেওয়া হয় চালসহ নানা প্রণোদনা ও সহায়তা। তবে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় এই সময়গুলোতে মাছ নিধন বন্ধ থাকে না।

এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এলিজা খাতুন জানান, সুতিজাল ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করা হয়েছে। নোটিশ অমান্যকারীদের ১৫ দিনের মধ্যে সুতি বাধ ভেঙে দেওয়া হবে। এছাড়া এসব মৎস নিধনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলমান রয়েছে। প্রয়োজনে অভিযান আরও জোরদার করা হবে বলেও জানান তিনি।

ওডি/এসএএফ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড