সোনারগাঁও প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা সেতুর পাশে মেঘনা লঞ্চঘাট এলাকা থেকে বালু ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করার পরেও আবারও নদী ও সরকারি জায়গা দখল করে শুরু হয়েছে অবৈধ বালুর ব্যবসা।
সরেজমিন মেঘনা লঞ্চ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দখলদাররা প্রকাশ্যে নদী দখল করে বালু ভরাট করে ওই বালু ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। এছাড়া উচ্ছেদ অভিযানের পর যে সব জায়গা এতদিন খালি ছিল সে সব জায়গা প্রকাশ্যে ও রাতের বেলা দখল করে বিভিন্ন দোকানপাট ও স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের মেঘনা সেতুর উত্তর পাশে মেঘনা লঞ্চঘাট এলাকায় নদী ও বিআইডব্লিউটিএর প্রায় চার বিঘা জায়গা দখল করে কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে বালু ও পাথর মজুদ করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে ওই জায়গা দখল করে ব্যবসা করে আসছিল মেঘনাঘাট এলাকার জয়নাল আবেদীন, স্বপন মিয়া, ফজলুল হক, নাজমুল, জসিম, খোকন, মাহবুব মিয়া, সাইদের নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি সিন্ডিকেট।
নদী দখল করে অবৈধভাবে বালু ব্যবসা করছে এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী। স্থানীয় প্রশাসন ও সওজের কর্মকর্তারাও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
চলতি বছরের ২০ মে বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের কর্মকর্তারা নির্বাহী হাকিম ও পুলিশ নিয়ে ভূমি দখলসহ বিভিন্ন দোকানপাট নির্মাণ,অবৈধভাবে বালু ও পাথর মজুদ রেখে ব্যবসা করছিল সেসব ব্যক্তিদের সব ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদ করে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। এ দিকে ২০১৩ সালে সরকার মেঘনা সেতুর দুই পাশের তিন কিলোমিটারের মধ্যে সব ধরনের বালু ব্যবসা ও উত্তোলনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু এ নিয়ম মানছে না বালু ব্যবসায়ীরা। অপর দিকে মেঘনা লঞ্চঘাট এলাকার দখলকারীদের উচ্ছেদের পাঁচ মাস পার গওয়ার আগেই গত এক মাস ধরে দখলদাররা আবারও নদী ও সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধভাবে পাথর ও বালুর ব্যবসা শুরু করেছে।
লঞ্চঘাটে আসা যাওয়ার সড়কের দুইপাশ দখল করে নতুন করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ ও বালু পাথর মজুদ রাখার কারণে সড়ক সরু হয়ে গেছে। এ কারণে মেঘনা নদী পথ ব্যবহার করে লঞ্চ ও ট্রলারযোগে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া ও কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার যেসব যাত্রী ঢাকা নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে তারা পায়ে হেঁটে লঞ্চ ও ট্রলারে উঠতে সমস্যায় পড়ছেন।
এ ব্যাপারে গজারিয়া উপজেলার তেতৈতলা গ্রাদমের বাসিন্দা রমজান আলী জানান, বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ অভিযানের পর আমরা নির্বিঘ্নে ট্রলারযোগে যাতায়াত করতাম কিন্তু গত একমাস ধরে আবারও দখলদাররা নদী ও লঞ্চঘাট এলাকার সরকারি জায়গা দখল করে। এ কারণে সরু পথ দিয়ে লঞ্চ ও ট্রলারে উঠতে নামতে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
সরকারি জায়গা দখলের করে বালু পাথরের ব্যবসা করার বিষয়ে জানতে চাইলে ফজলুল হক ও মাহবুব মিয়া জানান, নদী ও সরকারি জায়গা দখলের সঙ্গে আমরা জড়িত নই। তবে খালি জায়গা পতিত পড়ে থাকায় আমাদের এলাকার ছেলেরা অস্থায়ীভাবে পাথর বালুর ব্যবসা করছে। বিআইডব্লিউটিএ কিংবা স্থায়ী প্রশাসন নিষেধ করলে তারা এ জায়গায় আর ব্যবসা করবে না।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর (নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর) উপপরিচালক মো. শহীদুল্লাহ জানান, আমাদের উচ্ছেদের পর আবার যারা নতুন করে দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড