কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
মামলার নথি দেখাকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জে আদালত কক্ষে এক আইনজীবীকে হাতকড়া পরানো নিয়ে জজ ও আইনজীবীদের মধ্যে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। এ ঘটনার জেরে এজলাসে ভাঙচুরসহ বিচারককে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ২টার দিকে কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার জেরে বিচারককে আধাঘণ্টা তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে আইনজীবীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এজলাস কক্ষে এসে অবরুদ্ধ ওই বিচারককে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আদালতজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আদালত ও একাধিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এ বিচারকার্য চলছিল। এ সময় কিশোরগঞ্জ বারের সিনিয়র আইনজীবী মো. ইকবাল বিপ্লব একটি মামলার নথি দেখতে চাইলে দায়িত্বরত বেঞ্চের সহকারী আনোয়ার কামাল মামলার নথি অ্যাডভোকেটের হাতে তুলে দেন। পরে মামলার ডাক আসলে আইনজীবী ওই মামলার নথি বেঞ্চ সহকারীকে দেওয়ার সময় আদালতের বিচারক মো. সুলেয়মান তা দেখে ফেলেন এবং আইনজীবীর সঙ্গে মামলার নথি নিয়ে তর্কে জড়িয়ে যান। এক পর্যায়ে বিচারকের নির্দেশে আইনজীবীর হাতে দায়িত্বে থাকা পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে দেন।
খবরটি উকিল বারের সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ ফেরদৌস ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ আলমের কাছে পৌঁছালে তাদের নেতৃত্বে আইনজীবীরা ওই এজলাসে এসে হাতকড়া ছাড়াতে বিচারকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা এজলাসের ভেতরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায় এবং বিচারককে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ আইনজীবীদের চাপের মুখে হাতকড়া খুলে দেয়। এরপর থেকে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
কিশোরগঞ্জ বারের সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন, ‘এজলাসের বেঞ্চ সহকারীর অনুমতিক্রমে একজন আইনজীবী যে কোনো মামলার নথি দেখতেই পারে। আর আমাদের আইনজীবী তা-ই করেছেন। কিন্তু বিচারক মো. সোলেয়মান কোন আইনে একজন সিনিয়র আইনজীবীর হাতে এজলাসের ভেতরে অবৈধভাবে হাতকড়া পরাল বুঝতে পারলাম না। আমরা বিচারকের বিরুদ্ধে ৫শ ধারা মামলা দায়েরসহ ওই আদালতের সকল কার্যক্রম বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) থেকে বন্ধ রাখব।’ এ সময় বিচারককে চাকরিচ্যুতের মাধ্যমে আদালত থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
পরে বিচারকের প্রত্যাহারের দাবিতে আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করে।
এ ব্যাপারে একাধিকবার চেষ্টা করেও বিচারকের কোনো মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ দিকে, খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিচারক মো. সুলেয়মানকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আদালতজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। তবে, এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড