ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
বিধি মোতাবেক নিয়োগ পেয়ে ১৯ বছর ধরে অফিস সহকারী (পিয়ন) পদে কর্মরত আছেন রফিজ উদ্দীন। কিন্তু কর্মরত পদেই আবারও লোকবল নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেখে বিপাকে পড়েছেন তিনি। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে রফিজের পদের স্থলে অফিস সহায়ক নিয়োগ করা হবে উল্লেখ করা আছে। বিজ্ঞাপনটি স্থানীয় একটি দৈনিক ও একটি জাতীয় দৈনিকে ১৪ অক্টোবর প্রকাশ করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে এমন কাণ্ড। কর্মরত অফিস সহকারীর অভিযোগ আমাকে চাকরিচ্যুত করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে লোক নিয়োগের জন্য ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি এমন কাজ শুরু করেছেন।
জানা গেছে, ২০০০ সালের জুন মাসের ৭ তারিখে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন ও প্রধান শিক্ষক দবিরুল ইসলামের মাধ্যমে বিধি মোতাবেক অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ পেয়ে জগন্নাথপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত আছেন রফিজ উদ্দীন। তাদের মৃত্যুর পর ওই বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব ফারুক হোসেন এবং মোকলেছুর রহমান প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ পেয়েছেন।
কর্মরত অফিস সহায়ক রফিজ উদ্দীন বলেন, আমাকে চাকরিচ্যুত করতে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। পত্রিকায় দেখলাম আমার পদের স্থলে নিয়োগের জন্য অবৈধ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে। চাকরিতে যোগদান হতে শুরু করে এ পর্যন্ত বিধি মোতাবেক সকল কাগজপত্র রয়েছে আমার কাছে। আমি আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করব। কেন এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলো তার সঠিক জবাব চাই।
তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মারফত আলী, খালেক মুন্সি বলেন, রফিজ উদ্দীনের নিয়োগটি বৈধ। আমার দায়িত্বে থাকাকালীন তাকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া সে ওই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত আছেন। ওই চাকরি তারই প্রাপ্য।
জানা গেছে, নতুন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি নির্বাচন হবার পর থেকেই অফিস সহকারী রফিজ উদ্দীনের বেতন ভাতা বন্ধ করে দেয়। বেতন ভাতার পুনরায় উত্তোলন কাজ স্বাভাবিক করতে কাগজপত্র বিভিন্ন দপ্তরে তৈরিতে ব্যস্ত রফিজ উদ্দীন। এর ফাঁকে গত ১৪ অক্টোবর তার চাকরি বাতিল করে রেজুলেশন করে ম্যানেজিং কমিটি।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোকলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি বিদ্যালয়ের কক্ষ জে এস জয় কিন্ডার গার্টেনের কাছে ভাড়া দিয়ে ওই ভাড়া নিজে আদায় করে ভোগ করছেন। এছাড়াও বিদ্যুৎ না থাকায় বাড়ির রেফ্রিজেটর ব্যবহার করছেন বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ দিয়ে। যার বিল পরিশোধ করা হচ্ছে বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে।
সরেজমিনে গিয়ে কক্ষ ভাড়া এবং রেফ্রিজেটর ব্যবহারের প্রমাণ মিললেও জগন্নাথপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মোকলেছুর রহমান বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, অফিস সহায়ক পদ চেয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দুটো পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। তবে তাতে একটু ভুল রয়েছে। সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি পুনরায় প্রকাশ করা হবে।
জগন্নাথপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফারুক মেম্বার বলেন, আমাদের একজন নৈশ প্রহরী রয়েছে। একজন অফিস সহকারী ছিল। তিনি অবসর নিয়েছেন। আমরা নতুন জনবল নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এমন কাণ্ড নিয়ে এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলেও কিছু জানেন না উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম সাইদ হাসান। তিনি বলেন, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক অফিস সহায়ক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেন। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। তবে বাকি অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখা হবে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড