শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে স্বামীর শারীরিক নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে গৃহবধূ হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় রবিবার (১৩ অক্টোবর) বিকালে নিহতের স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নকলা শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রিহিলা মহলার বাসিন্দা চান মিয়া তার কন্যা চায়নাকে (২৫) প্রায় এক যুগ আগে নালিতাবাড়ী উপজেলার তালুকপাড়া গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে আমজাদ হোসেনের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের পর প্রায়ই আমজাদ তার স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য নানাভাবে নির্যাতন করত। এক পর্যায়ে প্রায় এক বছর আগে শ্যালক শাকিল বেড়াতে এলে ভগ্নিপতি আমজাদ তাকে আটকে রেখে যৌতুক দাবি করে। পরে রিহিলার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফিরোজ মিয়ার মধ্যস্থতায় শাকিলকে ছাড়িয়ে নিয়ে জমি বিক্রি করে আমজাদকে এক লাখ টাকা যৌতুক দেন শ্বশুর চান মিয়া। কিন্তু তারপরও ভাগ্যহত গৃহবধূ চায়নার ওপর বন্ধ হয়নি নির্যাতন।
গেল কুরবানির ঈদের আগে স্বামী আমজাদ তার স্ত্রী চায়নাকে ব্যাপক মারধর করে। এতে চায়না গুরুতর আহত হলে প্রথমে তাকে কবিরাজী চিকিৎসা করায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কিন্তু কিছুদিন যেতেই চায়নার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তার পিতার বাড়ি না জানিয়ে গোপনে চায়নাকে প্রথমে নালিতাবাড়ী ও পরে ৫ অক্টোবর ময়মনসিংহের সিটি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হলে চায়নাকে চুরখাই কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ৮ অক্টোবর ভর্তি করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সেখানে ভর্তির পর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে চায়নার বাবার বাড়িতে খবর পাঠানো হয়।
অবশেষে রবিবার সকাল নয়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় গৃহবধূ চায়না। এমতাবস্থায় স্বামীর বাড়ির লোকজন চায়নাকে তালুকপাড়াস্থ বাড়ি এনে বিকালে মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু চায়নার বাবার বাড়ির লোকজন নালিতাবাড়ী থানায় শরণাপন্ন হয়।
নালিতাবাড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল, বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেন এবং স্বামী আমজাদ ও শ্বশুর নূর ইসলামকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা চান মিয়া বাদী হয়ে চায়নার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালককে আসামি করে নালিতাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি জানিয়েছেন, নিহত চায়নার পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে হত্যা মামলা দায়ের করে স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট এলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
ওডি/টিএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড