জামালপুর প্রতিনিধি
আদিবাসী গারো সম্প্রদায়ের অন্যতম একটি উৎসব ‘রংচুগালা’। গারো সম্প্রদায়ের রেওয়াজ অনুযায়ী অধিক ফসল উৎপাদনে ফসলের দেবতা ও সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করতে ‘রংচুগালা’ উৎসবের আয়োজন করে আসছে। গারোদের বিশ্বাস খারাপ আত্মা থেকে রক্ষা ও সংসারে সুখ সফলতা আনার জন্য দেবতাকে খুশি করা দরকার।
শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় মরিয়মনগর এলাকায় ‘রংচুগালা’ উৎসব শুক্রবার (১১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘রংচুগালার’ অর্থ হচ্ছে চাল থেকে তৈরি চিরা ফসলের মাঠে ছিটিয়ে দেওয়া। ফলে সৃষ্টিকর্তা খুশি হয়ে তাদের ফসল উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়।
শস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে ফসলের দেবতা ‘মিসিসিলং’ এবং সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহের প্রয়োজন। তাই এই রীতি শত শত বছর ধরে চলে আসছে। এসব কাজ করেন গারো সম্প্রদায়ের ‘খামাল’ বা প্রধান নেতা ।
উৎসবের শুরুতেই গারোদের ধর্মীয় আচার মন্ত্রপাঠ প্রার্থনা তারপর গারোদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি উৎসব চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। গারোদের বিশ্বাস তাদের ফসলের দেবতা ‘মিসিসিলং’ এবং সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করতে বা ধন্যবাদ জানালে প্রচুর ফসল উৎপাদন হয়। আর তাই বছরের ভাদ্র মাসে আগামী ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে আয়োজন করা হয় রংচুগালা উৎসবের।
এই উৎসবটি শুধু গারোদের ধর্মীয় আচারে সীমাবদ্ধ না থেকে গারো ও বাঙালিদের মিলন মেলায় রূপান্তরিত হয়। গারোদের কৃষ্টি-কালচার এই পরম্পরা যাতে নতুন প্রজন্মের কাছে হারিয়ে না যায় সে জন্য নিয়মিতভাবে আয়োজন করে। ‘রংচুগালার’ উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা সবাই প্রচুর আনন্দিত। তবে আয়োজন কমিটির নেতারা মনে করেন এ ধরনের বড় আয়োজন করতে প্রচুর অর্থের দরকার হয়। যা আমাদের একার পক্ষে আয়োজন করা খুবই কষ্টসাধ্য তাই সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।
গারো সম্প্রদায় খামাল ও জনসন মৃ জানান, বাংলাদেশের গারো সম্প্রদায় বিভিন্ন স্থানে যুগযুগ ধরে এ রংচুগালা পালন করে আসছে। কৃষি নির্ভর গারোদের সৃষ্টিকর্তাকে সন্তুষ্ট না করে তাদের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব নয় তাই সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করার জন্য এ উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড