এসএম ইউসুফ আলী, ফেনী প্রতিনিধি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা মুহতাসিম ফুয়াদ। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবু তাহের, মা গৃহিনী সালমা ইয়াছমিন।
ফুয়াদের বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের লাঙলমোড়া গ্রামে। স্থানীয়দের কাছে তাদের বাড়িটি ‘শামীম মেম্বারের বাড়ি’ বলে পরিচিত।
জানা গেছে, ফুয়াদ বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে সন্তান, তার বড় এক বোন রয়েছে। তার বাবা সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোর থেকে অবসর নিয়েছেন। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। ছেলে গ্রেফতারের পর তিনি স্ত্রীসহ ঢাকায় অবস্থান করছেন। ফুয়াদের বাবার পাঁচ ভাই রয়েছেন। তারা কেউই গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে থাকেন না। ফুয়াদের নানার বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায়। তার নানা আবু তাহের একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তার দুই চাচা ও দুই মামা বর্তমানে সেনাবাহিনীতে চাকরি করছেন। সব মিলিয়ে সে সুশৃঙ্খল পরিবারের সদস্য বলে স্থানীয়রা জানান।
ফুয়াদের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, ফুয়াদ চট্টগ্রাম ক্যান্টমেন্টে বড় হয়েছে। সেখানে থেকেই এইচএসসি সম্পন্ন করেছে। তখন সে ছিল শান্ত প্রকৃতির। দুয়েকবার গ্রামের বাড়িতে গেলেও চুপচাপ ছিল। তাদের পরিবারের অন্যরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নয়। এমন পরিবারের ছেলেটি এমন নৃশংসতায় জড়িয়েছে এবং আবরারের সন্দেহভাজন হত্যাকারীদের মধ্যে ফুয়াদের নাম রয়েছে, এটা শুনেই আঁতকে ওঠেন স্বজনরা!
ফুয়াদের স্বজন ও লাঙলমোড়া গ্রামের ইউপি মেম্বার সরোয়ার মাহমুদ শামীম বলেন, ফুয়াদ আমার জেঠাতো ভাইয়ের ছেলে। সে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তা জানা ছিল না। তাকে গ্রেফতারের পর আমরা এটা জেনেছি। আমাদের আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে সে ছিল একমাত্র বুয়েটের ছাত্র। তার মতো নম্রভদ্র ছেলে এমন নৃশংসতায় জড়াবে তা আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। কোনো দিন তার পরিবারের ‘টু-শব্দটিও’ শুনিনি।
ফুয়াদ বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি (সদ্য বহিষ্কৃত)। আবরার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সোমবার (৭ অক্টোবর) তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার (৬ অক্টোবর) রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে আবরার ফাহাদকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।
শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আবরারের বাবা সোমবার রাতে রাজধানীর চকবাজার থানায় ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ওডি/এমআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড