বরিশাল প্রতিনিধি
নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে বুধবার থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। আশ্বিনী পূর্ণিমায় মা ইলিশের প্রধান প্রজনন নিরাপদ করার জন্য এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে মৎস্য অধিদপ্তর, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার মেঘনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচটি বৃহৎ নদীর দিকে কড়া নজর রাখবে প্রশাসন। ইলিশের অভয়াশ্রমের বেশিরভাগ বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও পিরোজপুর জেলা সংলগ্ন নদ-নদীগুলোকে নিষেধাজ্ঞাকালীন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে মৎস্য অধিদপ্তর। এসব জেলা ও উপজেলা সংলগ্ন নদ-নদীর দিকে বিশেষ সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন, বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আজিজুল হক।
তিনি বলেন, বরিশালের হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ সংলগ্ন মেঘনা, ভোলার লালমোহন, মনপুরা, চরফ্যাশন সংলগ্ন মেঘনা, পটুয়াখালীর কলাপাড়া সংলগ্ন পায়রা নদী এবং বাউফল সংলগ্ন তেতুলিয়া নদী, বরগুনার পাথরঘাটা সংলগ্ন বিশখালী নদী, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া সংলগ্ন বলেশ্বর নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় এবার কড়া নজরদারিতে থাকবে বলে জানান।
ইলিশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান গবেষক ড. আনিসুর রহমান জানান, ৭০-৮০ ভাগ ইলিশ ডিম ছাড়ে আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমায়। এ সময়ে ডিম ছাড়ার জন্য মা ইলিশ গভীর সাগর ছেড়ে মিঠা পানির নদীতে চলে আসে। চলতি বছর ১৩ অক্টোবর আশ্বিনী পূর্ণিমা। তাই মা ইলিশের আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে পূর্ণিমার আগে ১৭ দিন এবং পরে চার দিন অর্থাৎ মোট ২২ দিন ইলিশ নিধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মৎস্য বিভাগের গবেষণা অনুযায়ী ইলিশের মূল উৎপাদন কেন্দ্র ছয়টি অভয়াশ্রম হচ্ছে- উত্তর-পূর্বে চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার শাহেরখালী থেকে হাইতকান্দী; দক্ষিণ-পূর্বে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর কুতুবদিয়া-গন্ডমারা পয়েন্ট; উত্তর-পশ্চিমে ভোলার তজুমউদ্দিন উপজেলার উত্তর তজুমউদ্দিন-সৈয়দ আশুলিয়া পয়েন্ট; দক্ষিণ পশ্চিমে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী পয়েন্ট এবং বরিশালের আড়িয়াল খাঁ, নয়াভাঙ্গুনী ও কীর্তণখোলার আংশিক এলাকা।
বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, মঙ্গলবার থেকে সাগরমুখী ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকবে। নদীতীরবর্তী এলাকায় বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মেঘনাসহ বড় নদী তীরে মা ইলিশ নিধন রোধে থাকবে বিশেষ টিম।
সাগর সংলগ্ন অন্যতম ইলিশ মোকাম পাথরঘাটা। সেখানকার প্রবীণ মৎস্য ব্যবসায়ী বাংলাদেশ ফিশিং বোট মালিক ফেডারেশনের গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে সাগরমুখী ট্রলার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপ পরিচালক ড. অলিয়ুর রহমান বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় জেলে ও ইলিশ আড়তদার ও জনপ্রতিধিদের নিয়ে দফায় দফায় সভা করেছেন। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় গঠন করা হয়েছে টাস্কফোর্স। অন্য বিভাগের মৎস্য দপ্তর থেকে প্রায় ৩০ মৎস্য কর্মকর্তাকে ২২ দিনের ডেপুটিশনে বরিশালে পাঠানো হয়েছে। ২২ দিনের কার্যক্রম তদারকি করতে গঠন করা হয়েছে একাধিক মনিটরিং কমিটি। বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতা অনুযায়ী যেসব এলাকায় বিশেষ করে বৃহৎ নদীগুলোতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ নিধনের অভিযোগ রয়েছে, সেসব এলাকায় এবার কড়া নজরদারিতে রাখা হবে।
এ দিকে শেষ মুহূর্তে মঙ্গলবার সকালে বরিশাল ইলিশ মোকামে দেখা গেছে, বেশ সরগরম চিত্র। তবে এ দিন ইলিশর দাম ছিল বেশ চড়া।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড