বগুড়া প্রতিনিধি
দু'চোখে আলো ছাড়াই দরিদ্র পিতা-মাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন অতুল মোহন্ত (৫০)। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পৌর এলাকার গড়চৈতন্যপুর কামারবাড়ীর অনন্ত মোহন্তের ছেলে তিনি। সেই আজন্ম অন্ধত্ব জয় করে আজ তিনি নিজে পরিশ্রম করে নিজের ও পরিবারের জন্য জীবিকা উপার্জন করেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, পৃথিবীর আলোহীন জন্মান্ধ অতুল মোহন্ত সাবালক হলে তাকে বিয়ে করানো হয়। গরীব বাবার সহায়তায় মানুষের সাহার্য নিয়ে কোনোমতে সংসারধর্ম চালাতে থাকেন অতুল। একমাত্র ছেলে সন্তানের জনক অতুল যখন তার আলোহীন জীবন নিয়ে দিশেহারা, তখন তিনি চেষ্টা করতে থাকেন নিজে কিছু করার। এ সময় বাড়ির পাশের কামারশালায় গনগনে আগুনে লাল হওয়া লোহায় কামারের সহযোগী হিসেবে বড় হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন অতুল। এক সময় তিনি এ কাজে দক্ষতা অর্জন করেন। দুই চোখে দৃষ্টিহীন অতুল এখন নিয়মিত কামারশালায় হাতুড়ি চালান।
এছাড়াও তিনি নিশানা মতো গৃহস্থবাড়িতে কাঁচি দিয়ে গবাদী পশুর খড় কাটতে পারেন, কুড়াল দিয়ে ঠিকমতো কাঠ চিরতে করেন। এ সবকিছুই তিনি একজন সুস্থ মানুষের মতো করে করতে পারেন।
শনিবার সকালে (৫ অক্টোবর) খড়কাটার সময় কথা হয় অতুল মোহন্তর সঙ্গে। এ সময় তিনি জানান, ‘অভাবের সংসার, তাই অন্ধ হলেও কাজ করার চেষ্টা করতে থাকি। যেদিন কাজের জন্য কেউ ডাকে সেদিন কাজ করে ১৫০/২০০ টাকা উপার্জন করি। প্রতিদিন কাজ পাই না। সরকারিভাবে দেওয়া প্রতিবন্ধী ভাতা এবং আমার উপার্জনে অতিকষ্টে আমার সংসার চলে।
অতুল মোহন্ত সম্বন্ধে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর তরিকুল ইসলাম জানান, ‘অত্যন্ত দরিদ্রতার মধ্যে অতুল মোহন্ত জীবনযাপন করছেন। অন্ধত্বকে জয় করে কাজের মাধ্যমে তিনি উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। আশাকরি এরকম একজন উদাহরণ সৃষ্টিকারী ব্যক্তির জন্য সহায়তার হাত প্রসারিত করবেন সদাশয় সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল।’
স্থানীয় সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ওয়াছিয়া আকতার রুনা জানান, ‘অন্ধ হলেও কাজের প্রতি খুবই আন্তরিক অতুল মোহন্ত। প্রতিবন্ধী তো বেটই অনেক সুস্থ মানুষের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত তিনি। এ রকম মানুষগুলোকে তুলে ধরা এবং সহায়তা করা প্রয়োজন।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড