• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

থানায় প্রকাশ্যে গায়ে আগুন দেওয়া সেই লিজা আর নেই

  নিজস্ব প্রতিবেদক

০২ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৫৩
লিজা
নিহত লিজা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

থানায় অভিযোগ করতে এসে রাজশাহী নগর পুলিশের অস্থায়ী সদর দপ্তরের পাশে প্রকাশ্যে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া সেই কলেজ ছাত্রী লিজা রহমান (১৯) মারা গেছে।

বুধবার (২ অক্টোবর) সকাল সোয়া সাতটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। স্বামীর নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ অভিযোগ না নেওয়ায় শনিবার ক্ষোভে শাহ মখদুম থানার সামনেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে।

লিজা গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রধানপাড়া এলাকার আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের পালিত মেয়ে। সে রাজশাহী মহিলা কলেজের বাণিজ্য দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। নগরীর পবাপাড়া এলাকার একটি মেসে ভাড়া থাকত।

লিজার সহপাঠীরা জানায়, লিজা প্রেম করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার খানদুরা গ্রামের খোকন আলীর ছেলে সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিয়ে করে। সাখাওয়াত রাজশাহী সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। সে রাজশাহীতে একটি ছাত্রাবাসে থাকে। গত ২০ জানুয়ারি পরিবারের কাউকে না জানিয়ে তারা বিয়ে করে। বিয়ের কিছু দিন পরে তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ দেখা দেয়। পরিবারের সম্মতি না পাওয়ায় সাখাওয়াত লিজাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেনি। এক পর্যায়ে সাখাওয়াত স্ত্রী লিজার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে গ্রামের বাড়িতে চলে যায়।

এ দিকে গত জুলাই মাসে লিজা সাখাওয়াতের খোঁজে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে চলে যায়। তখন স্বামীর বাড়িতে গেলে সাখাওয়াত বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর লিজা থানায় অভিযোগ করে। এ সময় পুলিশ সাখাওয়াত ও তার বাবাকে ডেকে আনেন। পরে তাদের সঙ্গে লিজাকে পাঠিয়ে দেয়। এর পর তারা কয়েক দিন একসঙ্গে থাকার পর সাখাওয়াত রাজশাহীতে ফিরে আবারও লিজার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

লিজার বন্ধুরা জানায়, সে শনিবার দুপুরে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে আবারও শাহ মখদুম থানায় যায়। সেখানে ডিউটি অফিসারকে অনেকবার অনুরোধ করে তার অভিযোগ রেকর্ড করার জন্য। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে পাগল বলে পাত্তা না দিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে।

থানা থেকে বের হয়েই কাছের একটি দোকান থেকে কেরোসিন কিনে থানার সামনে আসে। সেখানে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে লিজার শরীর পুড়ে যায়। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে পানি ঢেলে আগুন নেভায়। পরে প্রায় অচেতন অবস্থায় লিজাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে নিয়ে আসা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

শাহমখদুম থানা পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে, সেখানে অবস্থিত ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারে গিয়ে লিজা নিজের নাম জানায়। এরপর অভিযোগ লিপিবদ্ধ করতে গেলে, তিনি অভিযোগ না করে সেখান থেকে বের হয়ে যায় লিজা। থানার বাইরে অবস্থিত একটি দোকান থেকে কেরোসিন ও ম্যাচ কিনে। পরে দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় থানার পাশের একটি ফুটপাতে দাড়িয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

ওডি/এসজেএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড