ঈশ্বরদী প্রতিনিধি
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মা নদী পানি বেড়ে গেছে। আকস্মিক পানি বাড়ায় গত চার দিনে ঈশ্বরদী উপজেলার ৪০০ হেক্টর জমির সবজি-ফসল ও নিচু এলাকা তলিয়ে গেছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকদিন আগেও যেসব এলাকা ছিল মাঠের সবুজ ফসলে ভরা সেখানে এখন শুধুই পানি আর পানি। কৃষকের অনেক কষ্টের ধান-পাটের বীজতলা, মুলা, ধনে পাতা, পেঁয়াজ, রসুন, মাষকলাইসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।
লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চরকুরুলিয়া গ্রামের কৃষক রাকিব প্রমাণিক বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ায় ও বৃষ্টিপাতের কারণে তিন দিনে তার সাত বিঘা জমির মাষকলাই ডুবে গেছে।
সাঁড়া ইউনিয়নের কৃষক ইন্তেজার আলী জানান, এ বছর তেমন বন্যা না হওয়ায় চরের ৫ বিঘা জমিতে আগাম মাষকলাই চাষ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তু গত চার-পাঁচ দিনে পদ্মার পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় সব জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, প্রতি বছর পদ্মায় বন্যার পানি বৃদ্ধি পেলেও ফসল চাষের আগেই পানি নেমে যায়। ফলে কৃষকরা চরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে বিভিন্ন ফসল চাষ করে থাকেন। আর এ ফসল থেকেই সারা বছরের আর্থিক চাহিদা মিটিয়ে থাকেন। এ বছর তেমন বন্যা না হওয়ায় কৃষকরা ব্যাপকভাবে চাষ করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
সাঁড়া ইউনিয়নের পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদার জানান, কয়েক বছরের তুলনায় এই অসময়ে এভাবে পানি বাড়তে দেখা যায় নি। কোমরপুর থেকে সাঁড়াঘাট পর্যন্ত রক্ষা বার্ধের তিন থেকে চার ফুট নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পাকশী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস বলেন, দ্রুতই পাকশী পদ্মায় পানি বাড়ায় রূপপুরের সড়কের মাথায় নিচু জমির ফসল তলিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পাকশী ইউনিয়নের নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে বসতবাড়ির কোনো ক্ষতি হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, এ সময় নদীতে পানি বাড়ার কথা নয়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিন-চার দিন ধরে পদ্মায় পানি বাড়ছে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঈশ্বরদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। তবে যমুনায় পানি বাড়ছে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল লতিফ বলেন, সাঁড়া, পাকশী ও লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের আখ, ফুলকপি, গাজর, মাষকলাই, মূলা, বেগুন, শিম, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ধানসহ ৪০০ হেক্টর জমির সবজি ও ফসল তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ফসলের ক্ষতি হয়েছে লক্ষীকুন্ডার দাদাপুর, চরকুরুলিয়া, কামালপুর, ও বিলকেদায়। মাঠপর্যায়ে প্রাথমিক জরিপে এ তথ্য জানা গেছে। তবে পানি কমে না যাওয়া পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করা যাচ্ছে না।
ওডি/টিএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড