• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শরীয়তপুরের বেদেরা পেয়েছেন নাগরিক অধিকার

  শরীয়তপুর প্রতিনিধি

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৩৬
শরীয়তপুর
সাপ খেলা দেখাচ্ছেন বেদে সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি (ছবি : দৈনিক অধিকার)

শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের মুন্সির হাটে পাঁচ শতাধিক মানুষের মধ্যে প্রায় আড়াই শতাধিক বেদে পরিবার তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়ে নাগরিক অধিকার পেয়েছেন।

জানা যায়, তারা যাযাবর জীবন ছেড়ে এখন স্থায়ী বসতি গড়তে শুরু করেছেন। তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ভোটার হয়েছেন। আর ছেলে-মেয়েরা পেয়েছেন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় লেখাপড়া করার অধিকার।

ইতোমধ্যে অনেক বেদে তাদের আদি পেশা ছেড়ে চাকরি করছেন। অনেকে মুদি দোকান, চায়ের দোকান, মাছের ব্যবসা, কাপড়ের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। খুব দ্রুত তাদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটছে।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রায় ২৫-৩০ বছর আগে বেদে সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবার শরীয়তপুরের ডোমসার ইউনিয়নের কীর্তিনাশা নদীর তীরে অবস্থিত মুন্সিরহাট গ্রামে বসতি গড়েন।

সেখান থেকে তারা এলাকার সাপধরা, সাপে কাটা রোগীর বিষ নামানো, বানর নিয়ে সাপ খেলা দেখানো, সিঙ্গা লাগিয়ে বাত ব্যথার বিষ নামানো, দাঁতের পোকা ফেলানো, পুকুর ডোবায় হারানো সোনা-রূপার গহনা তোলাসহ তাবিজ-কবজ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

বেদে সর্দার আব্দুস ছাত্তার বলেন, এখানে আমার অধীনে ১২০টি পরিবার রয়েছে। তারা সবাই আমাকে মেনে চলে। আমাদের বড় শক্তি হচ্ছে ঐক্য। আমরা একতাবদ্ধ হয়ে চলাফেরা করি।

তিনি আরও বলেন, বেদে পরিবারগুলোতে প্রায় আড়াই শতাধিক ভোটার রয়েছে। গত নির্বাচনের সময় তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। এ বছর ভোটার হালনাগাদের সময় অনেকেই নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

বেদে পরিবারের সদস্য আরিফ হোসেন বলেন, আমাদের বাব-চাচারা যখন নৌকায় চরে যাযাবর জীবন যাপন করতেন, তখন আমরা লেখাপড়া করার সুযোগ পাইনি। ডোমসারের স্থানীয় বাসিন্দা হয়ে আমি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। আমার এক ভাই বর্তমানে আনসারে চাকরি করছে। শিক্ষার অভাবে আমাদের সমাজ অনেক পিছিয়ে আছে। তাই আমাদের সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে শিক্ষিত করব।

এ ব্যাপারে ডোমসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. চাঁন মিয়া মাদবর বলেন, বেদে সম্প্রদায়ের অনেকে জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। মেম্বারের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। তাদের ছেলে মেয়েরা যেন সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত হতে পারে সেজন্য আমরা প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর রাখছি।

তিনি আরও বলেন, নদী পার হয়ে যেন শিক্ষার্থীরা খুব সহজে প্রতিদিন স্কুলে যেতে পারে তার জন্য তাদের নৌকার ব্যবস্থা করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহাবুর রহমান শেখ দৈনিক অধিকারকে বলেন, বেদে সম্প্রদায়দের জন্য সরকার বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। তাদের স্থায়ী করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রর ব্যবস্থা করেছেন। তাদের সন্তানদের শিক্ষা উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ও সমাজ সেবার পক্ষ থেকে নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ ও পুরুষদের আইসিটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের স্বাবলম্বী করতে বিভিন্ন ধরনের ঋণ দিচ্ছেন। তাদের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সরকার কাজ করছে।

ওডি/এমবি

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড