মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি
বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলার সেগুন বাগানগুলো দূর থেকে দেখলে মনে হবে কেউ বুঝি আগুন লাগিয়েছে। কিন্তু না, এটা কোনো আগুন লাগানোর ঘটনা নয়। এটা নতুন এক ধরনের পোকার আক্রমণের ফল। এই পোকার আক্রমণে সেগুন গাছের সবুজ পাতা শত ছিদ্র হয়ে এক সময় বাদামি রং ধারণ করেছে।
উপজেলা দুটিতে দিন দিন এ পোকার আক্রমণ ব্যাপক আকারে ধারণ করছে। এর ফলে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়াসহ মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন শতশত বাগান মালিক।
সূত্র জানায়, লামার আলীকদম উপজেলার বিভিন্ন স্থানের পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে ব্যক্তি উদ্যোগে হাজার হাজার একর সেগুন বাগান সৃজন করা হয়েছে। অনেকে ব্যাংক বীমায় সঞ্চয় না করে এসব বাগান করতে পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন। চলতি বর্ষা মৌসুমে যেখানে বাগানগুলো সবুজ পাতায় ভরে ওঠার কথা, ঠিক সে সময়ে হঠাৎ এক ধরনের পোকার আক্রমণে গাছের পাতাগুলো ছিদ্র ছিদ্র হয়ে বাদামি রং ধারণ করছে।
শুধু তাই নয়, পোকার আক্রমণ বাগানের এক পাশ থেকে শুরু হয়ে এটি আস্তে আস্তে পুরো বাগানে ছড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে পোকার আক্রমণে দুই উপজেলার কয়েক হাজার বাগানের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, আলীকদমের শিবাতলী এলাকা, লামা উপজেলার মিরিঞ্জা, পৌর এলাকার লাইনঝিরি, নুনারঝিরি, চাম্পাতলী, টি টি অ্যান্ড ডিসিসহ বিভিন্ন এলাকার সেগুন বাগানগুলোতে এ পোকার আক্রমণ দেখা গেছে। প্রতিটি পাতায় ছোট আকারের সবুজ রংয়ের পোকার দল পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলেছে। এর ফলে পাতাটি দেখতে শতছিদ্র এবং বাদামি রং ধারণ করেছে। এক পর্যায়ে পাতাগুলো ঝরে পড়ছে। কৃষি বিভাগের লোকদের মতে এগুলো ছিদ্র পোকা।
লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের বাগান মালিক থোয়াইনু অং চৌধুরী, নুনারঝিরি এলাকার মো. ইউছুপ, আলীকদমের চৈক্ষ্যং এলাকার মোদাচ্ছেরসহ অনেক বাগান মালিক জানান, সেগুন গাছের সবুজ বাগানগুলো পোকার আক্রমণে বাদামি রং ধারণ করেছে। একটি বাগান আক্রমণ করার পর বাশের বাগানটি পর্যায়েক্রমে পোকার আক্রমণের শিকার হচ্ছে। গাছের পাতা ঝরে যাওয়ার কারণে চলতি মৌসুমে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হবে বলে তারা মনে করছেন বাগান মালিকরা।
সেগুন বাগানের পাতায় পোকার আক্রমণের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন-কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, বিষয়টি তাদের দৃষ্টিতে এসেছে। এ সমস্যা আগে কখনো দেখা যায়নি। তবে এ নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই। বৈশ্বিক জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে এসব বালাই দেখা দিতে পারে। লামা বন বিভাগ এই পোকার আলামত সংগ্রহ করেছে। এগুলো বন গবেষণাগারে পাঠানো হবে।
এর ফলে সেগুন গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সামান্য ব্যাহত হবে, তবে এতে তেমন ক্ষতি হবে না বলেও জানান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহমেদ।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড