• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কামারের ছেলের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন কাপ্তাই ফাঁড়ির ইনচার্জ

  কবির হোসেন ,কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:৫৪
কামারের ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন কাপ্তাই পুলিশ কর্মকর্তা আতাউল হক চৌধুরী
কামারের ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন কাপ্তাই পুলিশ কর্মকর্তা আতাউল হক চৌধুরী (ছবি : দৈনিক অধিকার)

গরম লোহার ওপর ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে ১০ বছরের শিশু মো. রাকিব। আর বাবা আরিফ লোহার বেড়ি দিয়ে ধরে আছেন আগুনে পুড়ে লাল হয়ে যাওয়া লোহার পাত। এ সময় বাবা-ছেলের মধ্যে এসব কথাপোকথন হচ্ছিল- বাবা আর পারছি না, আমার হাতে ব্যাথা করে। জবাবে বাবা বলেন, একটু কষ্ট কর সব ঠিক হয়ে যাবে।

যে ছেলের বয়স মাত্র ১০ বছের, যার এখন স্কুলে যাওয়া আর খেলাধুলা করার কথা। সেই ছেলেকে নিয়ে বাবা নিজ কামার দোকানে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করাচ্ছেন! হাতুড়ি দিয়ে পেঠানো হচ্ছে বড় বড় লোহা।

কাপ্তাই নতুন বাজার এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে কামারের কাজ করছেন মো. আরিফ। সংসারের স্ত্রীসহ তিন ছেলে মেয়ে। দোকানের আয় দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। অন্য কোনো কর্মচারী দিয়েও কাজ করানো সম্ভব নয়। তাই নিজ ছেলেকে স্কুলে না পাঠিয়ে নিজ দোকানে লোহা, রড়, দা, ছুরিসহ বিভিন্ন কিছু তৈরির নিজ দোকানে কাজ করাচ্ছেন।

এই দোকানে লোহার কিছু কাজ করাতে গিয়ে বিষয়টি চোখে পড়ে কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউল হক চৌধুরীর। তিনি দোকানের মালিক মো. আরিফকে বলেন, এই শিশুটি তোমার কি হয়? জবাবে উত্তর আমার ছেলে। তাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছ কেন?

জবাবে আরিফ বলেন, কি করব স্যার? সংসারের অভাব লেখা-পড়া করাতে খরচ বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়, তাই দোকানে কাজ করাচ্ছি।

এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা আতাউল হক চৌধুরী বলেন, আমি যদি তোমার ছেলের লেখা পড়ার সব খরচ বহন করি আর স্কুলে ভর্তি করে দিই, তুমি লেখা-পড়া করাবে? জবাবে আরিফ বলেন, তাহলে তো স্যার ভাল হয়। এ সময় কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউল হক চৌধুরী শিশু রাকিব ও তার বাবাকে নিয়ে কাপ্তাই বিএফআইডিসি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে প্রধান শিক্ষক মো. ইউসুফ মিয়ার সঙ্গে কথা বলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভতি করিয়ে দেন।

প্রধান শিক্ষক ইউসুফ বলেন, ছেলের লেখে-পড়ার আগ্রাহ আছে। একটু দেখভাল করলে সামনে এগতে পারবে।

এদিকে কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউল হক চৌধুরী বলেন, আমি দেখলাম সুন্দর একটি ছেলে লেখাপড়া না করে অকালে ঝরে পড়বে তাই দায়িত্ব মনে করে সকল খরচ স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছি এবং স্কুল ড্রেস তৈরি করে দিয়েছি। আর সব সময় ওই ছেলের খোঁজ-খবর নিচ্ছি, এটা আমার দায়িত্ব বলে মনে করি।

ওডি/ এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড