• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রেলওয়ে ব্রিজে লোহার-কাঠের ঠেকনা, ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন

  সোহেল রানা, সিরাজগঞ্জ

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৫১
ব্রিজের নিচে লোহার অ্যাঙ্গেল ও কাঠের স্লিপারের ঠেকনা
ব্রিজের নিচে লোহার অ্যাঙ্গেল ও কাঠের স্লিপারের ঠেকনা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার লাহিড়ীমহোনপুর ইউনিয়নের বঙ্কিরোট এলাকার ২৮ নম্বর এবং কয়ড়া ইউনিয়নের মহিষাখোলা-কামারপাড়া এলাকার ২৯ নম্বর রেলওয়ে ব্রিজের দুই গার্ডারে ফাঁটল ধরেছে। সেই সঙ্গে লোহার পাতে মরিচা ধরে সেটি ক্ষয়ে যাওয়ায় ট্রেন চলাচলের জন্য ব্রিজ দুটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় এ ব্রিজ দুটির নিচে লোহার অ্যাঙ্গেল ও কাঠের স্লিপারের ঠেকনা দেওয়া হয়েছে। এতে এ ব্রিজ দুটি দিয়ে প্রতিদিন থেমে থেমে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ২০টি ট্রেন।

গত বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত মহিষাখোলা কামারপাড়া ব্রিজ ঘুরে দেখা যায়, ব্রিজটির গার্ডারে বেশ কয়েকটি ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে রেল বিভাগ ওই ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজের নিচে লোহার অ্যাঙ্গেল ও কাঠের স্লিপারের ঠেকনা দিয়ে কোনোমতে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া এ দুটি ব্রিজের দুপাশে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ২০ কিলোমিটার লেখা সতর্ক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। এমনকি সেখানে রেল বিভাগ থেকে দুজন ওয়েম্যানও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ অবস্থার দেড় মাস অতিবাহিত হলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বর্ষার অজুহাতে মেরামত কাজে গড়িমসি করছে। ফলে এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ওয়েম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ও জাহাঙ্গীর আলম নামের আরেকজন বিগত এক সপ্তাহ করে এখানে ডিউটি করছেন। ট্রেন আসা দেখলেই তারা লাল ও সবুজ পতাকা উড়িয়ে ট্রেনের গতি কমিয়ে চলার সঙ্কেত দেন। চালক এ সঙ্কেত পেয়ে এ ব্রিজের অদূরে ট্রেন থামিয়ে দেন। এরপর গতি কমিয়ে ব্রিজটি পার হয়। এতে এ রুটে চলাচলকারী প্রায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। ফলে তারা সঠিক সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না।

মহিষাখোলা কামারপাড়া ব্রিজ রেলওয়ে ব্রিজের নিচে লোহার অ্যাঙ্গেল ও কাঠের স্লিপারের ঠেকনা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

তিনি আরও জানান, এই ব্রিজ দিয়ে প্রতিটি ট্রেন ঘণ্টায় মাত্র পাঁচ কিলোমিটার বেগে চলছে। এর ওপরে গেলেই ব্রিজটি ঝাঁকুনি দিয়ে কেঁপে উঠছে। ফলে এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম জানান, ঢাকা-ঈশ্বরদী রেল রুটের সিরাজগঞ্জ থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত যতগুলো ব্রিজ আছে এর অধিকাংশই বৃটিশ আমলে নির্মিত। ফলে এ দুটি ব্রিজের বয়স প্রায় ১শ বছর পার হয়েছে। এ ছাড়া উল্লাপাড়া ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার রেলপথ অংশটি চলনবিলের মধ্যে হওয়ায় প্রতি বছর বন্যা মৌসুমে পানির তীব্র স্রোতে ও ঢেউয়ে ধাক্কায় এ ব্রিজ দুটির গাডার দুর্বল হয়ে এর কোথাও কোথাও ফাটলেরও সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গাডারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনেকটাই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে।

রফিকুল ইসলাম জানান, এ রেলপথে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসসহ প্রায় ১৪টি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন ও ছয়টি তেল, কয়লা ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। সবগুলোই এখন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

পাকশী রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় রেলপথ ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আহসান উল্লাহ ভূইঁয়া ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজ দুটির ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচলের কথা স্বীকার করে বলেন, বর্ষা মৌসুমে চলনবিলের বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ও ঢেওয়ের আঘাতে ব্রিজ দুটির গার্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্ষা শেষ হলেও এখনো সেখানে অনেক পানি। তাই এ অবস্থায় সেখানে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, রেলপথটি রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের রেল যোগাযোগের একমাত্র পথ। তাই এ পথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আপাতত ব্রিজের নিচে অস্থায়ীভাবে সিসি ক্লিক নির্মাণ করা হয়েছে। বন্যার পানি কমে গেলে ওই ব্রিজের পাশে বিকল্প ট্রেন চলাচল ব্যবস্থা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজ দুটি নতুন করে নির্মাণ করা হবে। এর জন্য কিছু দিন সময় লাগবে।

ওডি/ এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড