ফেনী প্রতিনিধি
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সোনাগাজী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিটলারুজ্জামানকে অবশেষে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতিসহ তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠায় গত বেশ কিছুদিন ধরে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা চলছিল।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বিষয়টি এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দৈনিক অধিকারসহ একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে তার অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত হলে দুর্নীতির তদন্তে গঠিত কমিটি বেশ কয়েকটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাকে অন্যত্র বদলিসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন।
সূত্র জানায়, গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন-১) আব্দুল আলিম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সোনাগাজী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিটলারুজ্জামানকে প্রত্যাহারের আদেশ দেওয়া হয়। ওই আদেশে তাকে খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলা শিক্ষা অফিসে বদলী করা হয়।
শিক্ষক, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিটলারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে- চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সাব ক্লাস্টার প্রশিক্ষণের তিন লাখ টাকা আত্মসাৎ, প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য উপকরণ ক্রয়ের ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ, ‘ছোটদের শেখ হাসিনা’ বইটি ৮শ টাকার স্থলে এক হাজার টাকা দরে তার অধীন স্কুলসমূহে বিক্রি করে বই প্রতি ২শ টাকা হারে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত কর্মস্থলে অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিতি, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে অফিস ত্যাগ।
এছাড়া উপজেলার দাগনপাড়া মোশাররফ হোসেন ও বাংলাবাজার জয়নাল আবেদীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষকের কাছ থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ৪৬ জন শিক্ষকের কাছ থেকে সার্ভিস বহি খোলার নামে দুই হাজার টাকা হারে ৯২ হাজার টাকা গ্রহণ, উন্নয়ন মেলার নামে উপজেলার ১০৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি থেকে ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা করে আদায়, চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে আদায়, উপজেলা পরিষদ থেকে পাওয়া চেয়ার, টেবিল, ফাইল কেবিনেট নিজের বাসায় ব্যবহার করা, অভ্যন্তরীণ মডেল টেস্ট গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা হারে প্রায় দুই লাখ টাকা আদায়, শিক্ষক বদলির নামে বাণিজ্য, ১০৯টি বিদ্যালয় থেকে দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে উপজেলার ২০টি বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজের জন্য দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ পাওয়া টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা করে, একই অর্থ বছরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য উপজেলার ১৮টি বিদ্যালয়কে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্ধ দেওয়া হয়। বরাদ্দ পাওয়া ১৮টি বিদ্যালয় থেকে ১০ হাজার টাকা করে এবং বিদ্যালয়ে রুটিন মেরামতের জন্য ৪৮টি বিদ্যালয়কে ৪০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়। সেখান থেকেও হিটলারুজ্জামান গড়ে দুই হাজার টাকা করে অফিস খরচ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকৌশলীসহ হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে প্রতিটি বিদ্যলয় থেকে শিক্ষকদেরকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড