• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রাজাপুর হাসপাতালে চিকিৎসা দেন ওয়ার্ড বয়

  হাসান আরেফিন,ঝালকাঠি

১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:১৪
রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
রাজাপুর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (ছবি : দৈনিক অধিকার)

প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও অন্যান্য জনবল সঙ্কটে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির এখন বেহাল দশা। এতে করে রোগীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বর্তমান সরকার যখন চিকিৎসা সেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বদ্ধ পরিকর। সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও জনবল সঙ্কটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে ১৫ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে আছে মাত্র দুইজন। ১৩ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য আছে। এ জন্য প্রতিদিন হাসপাতালে রোগীরা এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান। উপজেলাবাসী চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ সচেতন মহলের।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাস্তবে সেবা দানের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার উন্নতি ঘটেনি। এখানে অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করা হলেও কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ কারণে অপারেশন থিয়েটারে স্থাপিত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি অযত্ন ও অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নারী-পুরুষ রোগীরা এসে চিকিৎসক না পেয়ে অতিরিক্ত খরচ করে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারের দ্বারস্থ হন। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের সিজারিয়ান অপারেশন করা জরুরি হয়ে পড়লেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তাদের সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয়।

অভিযোগ রয়েছে, রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডাক্তারের পরিবর্তে হাসপাতালের পিয়ন আর ওয়ার্ড বয়রা বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা দেন। ডাক্তার না থাকায় ব্যান্ডেজ, সেলাইসহ ছোটখাটো বিভিন্ন অস্ত্রোপচার পিয়ন ওয়ার্ড বয়রাই করে থাকেন।

উপজেলা কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেস্থিসিয়া), ডেন্টাল সার্জন, সহকারী সার্জনসহ অনেক চিকিৎসকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য আছে। ৫০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে খাদ্য বরাদ্দ পাওয়া গেলেও চাহিদা মোতাবেক ওষুধসহ চিকিৎসক ও জনবল পদায়ন দেওয়া হয়নি। অথচ এ হাসপাতালে প্রায় সময় ইনডোরে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী ভর্তি থাকে এবং আউটডোরে দেড়শ থেকে ২০০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসে।

বিশেষ করে গাইনি কোনো ডাক্তার না থাকায় মহিলা রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হাসপাতালে কোন ব্লাড ব্যাংকও নেই। এখানে বহু বছর ধরে এক্সরে মেশিন থাকলেও মেডিকেল টেকনোলজিস্টের (রেডিওলজিস্ট) অভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। হাসপাতালে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার (ওটি) ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও প্রয়োজনীয় জনবল, এনেস্থিসিয়া ও সার্জারি ডাক্তার না থাকায় সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এখানে দাঁতের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই। ডেন্টাল সার্জন তোফাজ্জেল হোসেনের পদায়ন থাকলেও তিনি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে সংযুক্তিতে থাকায় সেখানেই দায়িত্ব পালন করছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান চিকিৎসক সঙ্কটের কথা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে দুইজন ডাক্তার দিয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। ডাক্তার সঙ্কটসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড